কলম এখন সর্বজনীন- লেখকের এই মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো

"কলম এখন সর্বজনীন।"- লেখকের এই মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো
“কলম এখন সর্বজনীন।”- লেখকের এই মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।
‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ কলমের আকৃতি, উপকরণ ও ব্যবহারের বিচিত্রতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কঞ্চির কলম, পালকের কলম, নিব পেন, ঝরনা কলম এবং অত্যাধুনিক কালের ডট পেন যেমন ব্যবহারের অনেক সুবিধা হয়েছে, তেমনি তা সহজলভ্য হয়েছে। সেইসঙ্গে শিক্ষার প্রসার ও বিভিন্ন পেশার প্রয়োজনে কলমের ব্যবহারও বেড়েছে বহুগুণ।

কলম কানে গুজে রাখার জন্য খ্যাতি ছিল পণ্ডিত কিংবা দার্শনিকদের। আবার বিশেষ কোনো সম্প্রদায় কলমজীবী রূপে পরিচিত ছিল। কিন্তু আধুনিককালে কলম আর কারো কুক্ষিগত নয়-অল্প শিক্ষিত, শিক্ষিত সবারই প্রয়োজনের সামগ্রী। এর পিছনে সস্তা দাম অন্যতম বড়ো কারণ। রাস্তা-ঘাটে, ট্রামে- বাসে কলম বিক্রেতা হকারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, তাই তা সহজলভ্য। সস্তা হওয়ার জন্য পকেটমাররাও আজ আর কলম নিয়ে হাতসাফাই করে না।

অতি সাধারণ সামগ্রী হওয়ায় কলম রাখার জায়গাও আজ আর কেবল বুক-পকেটে সীমাবদ্ধ নেই- দারোগাবাবু পায়ের মোজায়, আধুনিক যুবা কাঁধের ছোটো পকেটে সাজিয়ে রাখে। ভিড় বাসে বা ট্রামে কখনো-কখনো বুক-পকেটে থাকা কলম মহিলাযাত্রীর চুলেও বেধে থাকে।

কলমের এই সর্বজনীনতা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের চরম উন্নতির ফলে। কলম উৎপাদন ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসায় তা যেমন সস্তা হয়েছে তেমনি ব্যবহারিক দিকেরও উন্নতি ঘটেছে। এই ‘কলম বিস্ফোরণ’-ই কলমকে সর্বজনীন রূপ দিয়েছে।

Leave a Comment