এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?-এই আশঙ্কা কাদের? তাদের এই বিপন্নতার কারণ কী

"এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?"-এই আশঙ্কা কাদের? তাদের এই বিপন্নতার কারণ কী
“এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?”-এই আশঙ্কা কাদের? তাদের এই বিপন্নতার কারণ কী?
‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় সামাজিক অবক্ষয়ের শিকার যে সকল দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ, তাদের কথা বলা হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার অনেকগুলি সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এই অস্থির সময়ের প্রেক্ষাপটে কবি শঙ্খ ঘোষ সাধারণ মানুষের বিপন্নতাকে স্পর্শ করতে চেয়েছেন।

কবিতার প্রথম স্তবকে কবি উপলব্ধি করেছেন-সাধারণ মানুষের ডানদিকে ধস ও বামে গিরিখাদ, অর্থাৎ তাদের অবস্থান ভয়াবহ এক প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে। শুধু তাই নয়, ‘বোমাবু’-র বিপদ সংকেত মাথার উপরে আর পায়ের নীচে হিমানীর বাঁধের অস্থায়িত্ব। অর্থাৎ, চারিদিকে প্রতিবন্ধকতার প্রাচীর ঘিরে রেখেছে বিপন্ন মানুষদের।

সভ্যতার সংকট কেবল বিপন্ন মানুষদের রুদ্ধ করেনি, কেড়ে নিয়েছে তাদের মাথার উপরের আচ্ছাদন-

“আমাদের ঘর গেছে উড়ে”

শুধু বর্তমান অস্তিত্বের সংকট নয়, তাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্নের আধার যে শিশুরা, তাদেরকেও রেহাই দেয়নি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। তাই-

“আমাদের শিশুদের শব
ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে!”

সব মিলিয়ে রক্তপাত, মৃত্যু আর অসহায়তায় তারা আত্মহারা-

“এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?”

বাঁচার কোনো দিশাই সেখানে নেই। নেই কোনো আদর্শবোধের প্রতিষ্ঠা যা সংকট উত্তরণের পথ দেখাতে পারবে। দিশাহীন আত্মসর্বস্ব রাজনীতি কিংবা রাষ্ট্রনীতির বশে থাকা সমাজব্যবস্থায় সেরকম কোনো সম্ভাবনা নেই বলে কবি মনে করেন। তাই বিপন্ন মানুষের মধ্যে যারা টিকে আছে, তাদেরকে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Comment