‘এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।’-তপন কে? কোন বিষয়ে তার সন্দেহ ছিল? সেই সন্দেহের নিরসন হয়েছিল কীভাবে? |
তপন হল আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে উল্লিখিত একটি অল্পবয়েসি স্কুলে পড়া ছেলে, যে তার ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে এসেছিল এবং গরমের ছুটি থাকায় সেখানে কদিন থেকেও গিয়েছিল।
জলজ্যান্ত একজন লেখককে খুব কাছ থেকে যে দেখা যায় এবং লেখকরা যে তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো মানুষ, সে বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল।
তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছিল যাঁর সঙ্গে, তিনি পেশায় ছিলেন একজন অধ্যাপক। মামার বাড়িতে গরমের ছুটির জন্যে কদিন থেকে যাওয়া তপন একদিন জানতে পারে তার নতুন মেসো একজন সত্যিকারের লেখকও। তিনি বই লেখেন এবং সে বই ছাপাও হয়। এই অবস্থায়-
(ক) লেখকদের কাছ থেকে দেখার প্রসঙ্গ নতুন মেসোকে কাছ থেকে দেখে তপন বুঝতে পারে লেখকদের অনেকটা কাছ থেকেও দেখা যায়।
(খ) লেখকরা বাবা-মামা-কাকার মতো মানুষ নতুন মেসোকে কাছ থেকে দেখে তপন বুঝতে পারে তার বাবা, ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতো লেখকরাও দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসেই ‘আরে ব্যস, এত কখনো খাওয়া যায়?’ বলে অর্ধেক তুলিয়ে দেন, চানের সময় চান করেন; ঘুমের সময় ঘুমান।
(গ) লেখকদের কাজ ছোটোমামাদের মতো লেখক মেসো তাঁর নিজের কাজ দিয়ে তপনকে বুঝিয়ে দেন লেখকরাও তপনের ছোটোমামাদের মতো খবরের কাগজের সব কথা নিয়ে প্রবলভাবে গল্প করেন, তর্ক করেন এবং শেষ পর্যন্ত ‘এদেশের কিছু হবে না’ বলে সিনেমা দেখতে কিংবা সেজেগুজে বেড়াতে বেরিয়ে যান।
– এভাবে লেখকরা একেবারে নিছক মানুষ প্রমাণিত হয়েছিলেন বলেই তাঁদের সম্পর্কে তপনের পূর্বোক্ত সন্দেহের নিরসন ঘটেছিল।