উষ্ণ মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্য দেখা যায় কেন
উষ্ণ মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্য দেখা যায় কেন ব্যাখ্যা করো
|
পৃথিবীর সর্বত্র বায়ু প্রবাহিত হলেও কেবল উদ্ভিদশূন্য মরু অঞ্চল বা মরুপ্রায় অঞ্চলে এবং উপকূল অঞ্চলে বায়ুর কার্য সর্বাধিক লক্ষ করা যায়। শীতল মেরু অঞ্চলগুলি বরফে ঢাকা থাকে। ফলে সেখানে বায়ুর কার্য তেমন প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। শুষ্ক মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্য ব্যাপকভাবে প্রাধান্য বিস্তার করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভূমিরূপ গড়ে ওঠে। মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ুর কার্য সর্বাধিক হওয়ার কারণ নিম্নরূপ —
বৃষ্টির অভাব
মরু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় না বলে গাছপালা জন্মাতে পারে না, ফলে বায়ুপ্রবাহের গতিপথে গাছপালা কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারে না। বায়ুপ্রবাহ নির্বিঘ্নে ও প্রচণ্ড গতিতে প্রবাহিত হওয়ার কারণে বৃষ্টিহীন মরু অঞ্চলে নানারকম ভূমিরূপ ভাস্কর্যের সৃষ্টি করে থাকে।
মরু অঞ্চলের চরমভাবাপন্ন জলবায়ু
মরু অঞ্চলে দিন ও রাত্রি এবং শীত ও গ্রীষ্মের উম্নতার পার্থক্য অত্যন্ত বেশি হওয়ার জন্য উয়তার পরিবর্তনে শিলায় প্রসারণ ও সংকোচন বেশি হয়, ফলে শিলা সহজেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে বালিতে পরিণত হয়।
যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাবল্য
মরু অঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু হওয়ার জন্য শিলা যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে টুকরো টুকরো খণ্ডে ভেঙে গিয়ে পরে বালিকণায় পরিণত হয়।
উদ্ভিদহীন অঞ্চল
মরু অঞ্চলে গাছপালা না থাকার কারণে গাছপালার শিকড়ের মৃত্তিকাকে আঁকড়ে ধরে রাখার সুযোগ নেই, ফলে মৃত্তিকা ও বালি শিথিল হয়ে আলগা ধুলোর মতো পড়ে থাকে। বায়ুপ্রবাহ তখন সহজেই শিথিল মৃত্তিকা ও বালিকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।
বালির সঙ্গে শিলার ঘর্ষণ
প্রবল বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে বালিরাশি উড়ে এসে বিভিন্ন শিলার ওপর ঘর্ষণ সৃষ্টি করে, এর ফলে শিলা ক্ষয় পেয়ে বালিকণায় পরিণত হয় এবং ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ভূমিরূপ ভাস্কর্যের সৃষ্টি করে।
উপকূল অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্যের কারণ–
(ক) শিথিল ও আলগা মৃত্তিকাকণা। (খ) দীর্ঘ শিকড়যুক্ত বড়ো গাছের অভাব। (গ) উন্মুক্ত সমুদ্র থেকে বাতাস দ্রুতগতিতে এসে উপকূলকে ক্ষয় করে। (ঘ) বায়ুর গতি বেশি হলে সমুদ্রতরঙ্গের ক্ষয়ক্ষমতা বেশি হয়। (ঙ) উন্মুক্ত সমুদ্রে বায়ু বাধাহীনভাবে এসে উপকূলে সঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন প্রকার বালিয়াড়ির সৃষ্টি করে।