‘আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।’-কার লেখা, কোন রচনার অংশ? আজ কী কী অবলুপ্তির পথে বলে বস্তার মনে হয়েছে এবং কীভাবে সেগুলোর অবলুপ্তি ঘটেছে? |
উদ্ধৃতিটি লেখক শ্রীপাস্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের একটা অংশ।
‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে বর্ণিত হয়েছে কালি-কলম ও দোয়াতের হারিয়ে যাওয়ার কথা। কীভাবে সেসব হারিয়ে গেল, তার বর্ণনাও দিয়েছেন লেখক। তা থেকে আমরা জানতে পারি-
কলমের হারিয়ে যাওয়া
ডটপেন আসার আগে লেখক শ্রীপান্থদের মতো অনেকেই বাঁশ, কঞ্চি-এসব কেটে কলম বানাতেন। সেই কলম বানিয়ে তৈরি কালিতে মাখিয়ে লেখালেখি করা হত। তাদেরও আগে একইভাবে ব্যবহার করা হত পালকের কলম ‘কুইল’। আরও অনেক আগে মিশরীয়রা ব্যবহার করত খাগের কলম। ফিনিসিরা ব্যবহার করত হাড়ের কলম এবং রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার ব্যবহার করতেন ব্রোঞ্জের কলম স্টাইলাস। সেসব হটিয়ে কলমের জগতে বিপ্লব আনে ফাউন্টেন পেন। বেশ কিছুকাল তার গৌরব বজায় ছিল। তারপরই সস্তার বলপেন আসাতে আগেকার পেন হারিয়ে যায়। বর্তমানে কমপিউটার এসে পড়ায় বলপেনও অবলুপ্তির পথে।
কালির হারিয়ে যাওয়া
আগের দিনে কালি তৈরি হত নলখাগড়ার কলম, বাঁশ-কঞ্চির কলম, পালকের কলম, ফাউন্টেন পেন ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্যে। প্রথম দিকে এই কালি নিজেদেরই তৈরি করে নিতে হত। পরবর্তীকালে কালি-বড়ি এবং তরল কালি আলাদা করে কিনতেও পাওয়া যেতে শুরু করে। তখন পাওয়া যেত ফাউন্টেনের জন্যে বিদেশি কালিও। কালি ব্যবহারের কলমগুলো উঠে যাওয়ার কালিও আজ অবলুপ্তির পথে।
দোয়াতের হারিয়ে যাওয়া
কালি ব্যবহারের জন্যে আগেকার দিনে প্রথমদিকে মানুষ তৈরি করে নিত মাটির দোয়াত। পরে কাট, কাট-গ্লাস, পোর্সেলিন, শ্বেতপাথর, সোনা প্রভৃতির দোয়াতও ব্যবহার হতে শুরু করে। কালি-কলমের ব্যবহার উঠে যাওয়ায় দোয়াতও তাই অবলুপ্তির পথে।
-এভাবেই কালি-কলম-দোয়াত আজ অবলুপ্ত হতে বসেছে।