আমি কাফেরের শিষ্যকে এক গণ্ডুষ জলও দেব না -কে, কখন উক্তিটি করেন? উক্তিটির আলোকে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

"আমি কাফেরের শিষ্যকে এক গণ্ডুষ জলও দেব না"-কে, কখন উক্তিটি করেন? উক্তিটির আলোকে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো
“আমি কাফেরের শিষ্যকে এক গণ্ডুষ জলও দেব না”-কে, কখন উক্তিটি করেন? উক্তিটির আলোকে বক্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

বক্তা

কর্তার সিং দুগাল রচিত গল্পের বাংলা অনুবাদ ‘অলৌকিক’ গল্পে বলী কান্ধারী উদ্ধৃত উক্তিটি করে। গুরু নানকের শিষ্য মর্দানা যখন প্রবল তৃষ্ণায় কাতর হয়ে তার শরণাপন্ন হয়েছিল তখন সে এই উক্তিটি করে।

বলী কান্ধারীর চরিত্র

বলী কান্ধারী ছিল একজন দরবেশ বা সাধু। সে হাসান আব্দালের জঙ্গলে এক পাহাড়ের চূড়ায় কুটির বেঁধে বাস করত। দরবেশ বা সাধু হলেও প্রবল অহংবোধ ছিল তার। তৃষ্ণায় কাতর মর্দানা ‘পির নানকের সঙ্গী’ জানার পরে কান্ধারী মর্দানাকে তেষ্টার জলটুকুও দেয়নি, তাড়িয়ে দিয়েছে। জীবপ্রেম বিষয়টি তার স্বভাববিরোধী। সাধু পরিচয়ে ভণ্ডামি করা তার কাজ। সে একজন হৃদয়হীন মানুষ, কেবল গুরু নানককে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে তার শিষ্য মর্দানাকে শরণাগত হতে দেখেও তাকে একবিন্দু জল দেয়নি, বারবার অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে। সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির অধিকারী কান্ধারী ভিন্ন মত বা ধর্মের মানুষ মর্দানাকে ‘কাফেরের শিষ্য’ হিসেবে বিচার করে নিজের ক্ষুদ্র মনের পরিচয় দিয়েছে। প্রকৃতির দান যে জল, সেই জলের উপরেও নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে চেয়েছে। সে একজন প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষ বলেই গুরু নানককে হত্যা করতে চেষ্টা করেছে। অতএব, বলী কান্ধারী কোনোমতেই একজন আদর্শ দরবেশ বা সাধু তো ছিলই না; বরং সে যে একজন নিন্দনীয় মানুষ,’ তা প্রমাণ হয়ে যায়।

Leave a Comment