আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই- লেখকরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন তা প্রবন্ধ অনুসারে লেখো

"আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।"- লেখকরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন তা প্রবন্ধ অনুসারে লেখো
“আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।”- লেখকরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন তা প্রবন্ধ অনুসারে লেখো।

লেখক শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কালি কলমের অতীত রূপ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

বাঁশের কঞ্চির তৈরি কলমে যে কালি দিয়ে লেখা হত সেটাও তৈরি হত ঘরোয়া উপায়ে। ঘরোয়া কালি তৈরির নানা রকম পদ্ধতি ছিল, সবচেয়ে ভালো পদ্ধতিটির সম্পর্কে প্রাচীনদের দ্বারা কথিত একটি শ্লোক পাওয়া যায়-


“তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা
‘ছাগ দুগ্ধে করি মেলা

লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি
ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।”

-অর্থাৎ তিল, ত্রিফলা (আমলকী, হরীতকী, বহেড়া) আর সিমুল ছাল ছাগলের দুধে মিশিয়ে লোহার পাত্রে সেই দ্রবণকে লোহার পাত দিয়ে ঘষলে উৎকৃষ্ট মসি অর্থাৎ কালি তৈরি হয় যা কাগজ ছিঁড়ে গেলেও নষ্ট হয় না। কিন্তু সাধারণভাবে ছাত্রছাত্রীরা আরও সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করত। কড়াইয়ের তলায় জমা কালি সংগ্রহ করে পাথরের বাটিতে জলে গুলে নিত। কখনো- কখনো তাতে হরীতকী ঘষা হত অথবা ভাজা আতপ চাল পুড়িয়ে বেটে ওই দ্রবণে মেশানো হত। সবকিছু ভালো করে মেশানোর পর লোহার খুন্তির গোড়ার দিক গরম করে ওই জলে ছ্যাঁকা দেওয়া হত। অল্প জল ওই ছ্যাঁকায় অনেক সময় টগবগ করে ফুটত। সব শেষে ওই দ্রবণ ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে ভরে লেখার উপযোগী করে রাখা হত।

Leave a Comment