অসুখী একজন কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো |
সাহিত্যের যে-কোনো সৃষ্টিই সাধারণ বিশেষ নামে চিহ্নিত হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ওই নামের সার্থকতা থাকা বাঞ্ছনীয় হয়ে ওঠে। কেননা ‘nothing succeeds like success’। কবিতার নামকরণের ক্ষেত্রেও কথাটা সমান সত্যি। সেদিক দিয়ে বিখ্যাত চেক কবি পাবলো নেরুদার লেখা ‘অসুখী একজন’ কবিতার নামকরণের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই-
মূল বক্তব্য
কবিতাটির বক্তাকে যুদ্ধের জন্যে দূরে চলে যেতে হয় তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীকে ফেলে রেখে। স্বামীর ফিরে আসার প্রতীক্ষায় দিন কাটতে থাকে সেই অসুখী মহিলাটির। ক্রমশ সপ্তাহ থেকে মাস। তারপর বছরের পর বছর কেটে যায়, স্বামীটি আর ফেরেন না। তিনি যে আর ফিরবেন না, সেটা মহিলাটির অজানাই থেকে যায়। তারপর তাদের শহরেও চলে আসে যুদ্ধ। সব ধ্বংস হয়ে যায় সেই যুদ্ধে। শুধু থেকে যায় ধ্বংসের চিহ্ন, রক্তের কালো দাগ আর স্বামীর প্রতীক্ষায় থাকা মেয়েটি।
ব্যঞ্জনাগত দিক
কবিতায় কোনো পঙ্ক্তিতেই ‘অসুখী’ কথাটির উল্লেখ নেই। কিন্তু কবিতাটির মূল বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, অসুখী একজন হল যুদ্ধের ধ্বংস দেখতে বাধ্য হওয়া এবং দীর্ঘদিন স্বামীর প্রতীক্ষায় থেকেও তাঁকে না ফিরে পাওয়া মহিলাটি। সেদিক দিয়ে ‘অসুখী একজন’ কথাটি তার ক্ষেত্রে বিশেষ- ভাবে ব্যঞ্জিত।
কাব্যরসের দিক
কবিতাটির রসপরিণতি ট্র্যাজিক। সেই রস গড়ে উঠেছে অসুখী একজন, অর্থাৎ মহিলাটিকে কেন্দ্র করেই।
কেন্দ্রমুখিনতা
কবিতাটির যা কিছু বক্তব্য-ব্যঞ্জনা-রস এবং প্রচ্ছন্ন কাহিনি, তাও গড়ে উঠেছে অসুখী একজনকে কেন্দ্র করে।
-এসব দিক বিচার করে আলোচ্য কবিতার নামকরণকে সার্থক বলতেই হবে।