অলৌকিক গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো
‘অলৌকিক’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। |
ভূমিকা
সাহিত্যে নামকরণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ নামকরণই পাঠ্য ও পাঠকের মধ্যে ভাবসেতু নির্মাণে সহায়তা করে। সাহিত্যের নামকরণ মূলত তিনভাবে হয়ে থাকে বিষয়কেন্দ্রিক, চরিত্রকেন্দ্রিক ও ব্যঞ্জনাধর্মী।
প্রথম ঘটনা
কর্তার সিং দুগ্গাল রচিত গল্পের বাংলা অনুবাদ ‘অলৌকিক’ গল্পটিতে দুটি আলাদা ঘটনা রয়েছে। প্রথম গল্পটি হল- হাসান আব্দালের জঙ্গলে গুরু নানকের শিষ্য মর্দানা তৃয়ার্ত হলে জলপানের জন্য বলী কান্ধারীর কাছে যায়। তিনি ‘কাফেরের শিষ্য’-কে এক গন্ডুষও জল দেবেন না বলে বারবার তাড়িয়ে দিলে গুরু নানক মর্দানাকে একটা পাথর তুলতে বলেন এবং সেখান থেকে জলের ঝরনা বেরিয়ে আসে। ঠিক সেসময় বলী নিজের কুয়োয় একটুও জল পায় না এবং রেগে গিয়ে পার্থরের চাঁই গড়িয়ে দেয় গুরু নানক ও তার শিষ্যদের উদ্দেশে। কিন্তু গুরু নানক তাঁর ক্ষমতাবলে গড়িয়ে আসা সেই পাথর হাত দিয়ে থামিয়ে দেন। এই পাথর থামানোর ঘটনা লেখকের কাছে অলৌকিক বলে মনে হয়েছিল, তিনি এ নিয়ে তর্কও করেছিলেন।
দ্বিতীয় ঘটনা
এই গল্পের দ্বিতীয় ঘটনাও ঘটেছিল পাঞ্জাসাহেবেই। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা খবর পেয়েছিল ক্ষুধার্ত-তৃয়ার্ত বন্দিদের ট্রেন পাঞ্জাসাহেবের উপর দিয়ে যাবে। তারা বন্দিদের জন্য খাবার ও জলের বন্দোবস্ত করে এবং ট্রেন থামানোর জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। কিন্তু তারা ট্রেন থামাতে নারাজ হলে স্থানীয় মানুষ লাইনে শুয়ে পড়ে, তাদের উপর দিয়ে ট্রেন চলে গেলেও অবশেষে থামে। এভাবেই পাঞ্জাসাহেববাসীরা বন্দিদের মুখে অন্নজল তুলে দেয় নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে। এটি আর-একটি অলৌকিক ঘটনা।