![]() |
| অধঃক্ষেপণ (Precipitation) বলতে কী বোঝো? অধঃক্ষেপণের বিভিন্ন রূপগুলি আলোচনা করো। |
অধঃক্ষেপণ
উদাহরণ: বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি প্রভৃতি।
অধঃক্ষেপণের শ্রেণিবিভাগ: অধঃক্ষেপণ মূলত দুই রূপে হয়– জলরূপে বা তরলরূপে এবং বরফ রূপে বা কঠিন রূপে।
জলরূপে বা তরলরূপে অধঃক্ষেপণ
(i) বৃষ্টিপাত (Rainfall): জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু হালকা হওয়ায় ঊর্ধ্বগামী হয়। এই ঊর্ধ্বগামী বায়ু উপরে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এলে ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়। এই ছোটো, বড়ো জলকণাগুলি পরস্পর সংযুক্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পায় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। ভূপৃষ্ঠে একসঙ্গে বহু জলকণার পতনকেই বৃষ্টিপাত বলে। প্রসঙ্গত, বৃষ্টিপাতে জলকণার ব্যাস প্রায় 2 মিমি বা তার চেয়েও বেশি হয়।
(ii) গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি (Drizzle): উচ্চ বা মধ্য বায়ুমণ্ডলের স্তর থেকে কখনো কখনো 0.5 মিমির কম ব্যাসযুক্ত জলকণা গুঁড়িগুঁড়ি আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে গুঁড়িগুড়ি বৃষ্টি (Drizzle) বলে। শীতকালে স্ট্যাটাস মেঘ থেকে এই ধরনের বৃষ্টিপাত হয়।
বরফরূপে বা কঠিনরূপে অধঃক্ষেপণ
(i) শিলাবৃষ্টি (Hail Storm): অনেক সময় জলীয় বাষ্পপূর্ণ ঊর্ধ্বমুখী বায়ু প্রবল গতিতে অনেক উপরের দিকে অতি শীতল স্থান পর্যন্ত উঠে যায়। সেখানে অধিক শৈত্যের জন্য জলকণা জমাট বেঁধে ছোটো ছোটো বরফকণার সৃষ্টি করে। বায়ুর গতি কমে গেলে এই বরফকণাগুলি পরস্পর সংযুক্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের টানে বৃষ্টির সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের দিকে নেমে আসতে থাকে, একেই শিলাবৃষ্টি বলে। কিউমুলোনিম্বাস মেঘে শিলাবৃষ্টির উৎপত্তি হয়। ভারতবর্ষে কালবৈশাখীর সময় মাঝে মাঝে শিলাবৃষ্টি হয়। শিলাবৃষ্টিতে বরফকণার পরিধি প্রায় 550 মিমি হয়ে থাকে।
(ii) তুষারপাত (Snowfall): শীতপ্রধান দেশ বা উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু হিমাঙ্কের থেকে কম উয়তায় (0°C-এর কম) ঘনীভূত হলে জলকণার বদলে ময়দার গুঁড়োর মতো তুষারে পরিণত হয়। এই তুষার পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে, তাকে তুষারপাত বলে।
(iii) স্লিট বা বরফপত্র (Sleet): অনেক সময় ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি শীতল মেঘের স্তর ও তার ওপরে উয় মেঘের স্তর অবস্থান করে। মধ্য ও উচ্চ অক্ষাংশে তুষার নীচে পড়ার সময় উয় বায়ুস্তরের মধ্যে গলে জলকণায় পরিণত হয়, এই জলকণাগুলি ভূপৃষ্ঠের কাছে আবার শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এলে জমাট বেঁধে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুষারকণায় পরিণত হয়, এই অধঃক্ষেপণকেই স্লিট বলে।
(iv) শিশিরপাত্ত (Dewfall): ভূপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি থাকা জলীয় বাষ্প ঘাস, গাছপালার স্পর্শে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তার ওপর জলকণারূপে পতিত হয়, একে শিশিরপাত বলে।
(v) গ্লেজ (Glaze): শীতল নাতিশীতোয় অঞ্চলে যখন উন্নতা D°C-এর কম হয়ে যায়, তখন ওই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হলে বৃষ্টির কণাগুলি ভূমি স্পর্শ করা মাত্রই অতি শীতলতার কারণে বরফে পরিণত হয়ে যায়। সমগ্র অঞ্চলটিতে বরফের এইরূপ আস্তরণকে বলা হয় গ্লেজ।
%20%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%A4%E0%A7%87%20%E0%A6%95%E0%A7%80%20%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%9D%E0%A7%8B%20%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%83%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A6%A3%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%20%E0%A6%B0%E0%A7%82%E0%A6%AA%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%20%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B.jpg)