১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? |
লর্ড ক্যানিং-এর শাসনকালে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহি, রাজা-মহারাজা ও জনগণের অসন্তোষকে কেন্দ্র করে যে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল, তা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল সিপাহিদের মধ্যে এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজের ব্যবহার সংক্রান্ত অসন্তোষ।
বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ
এনফিল্ড রাইফেল নামক এক ধরনের বন্দুকের কার্তুজ ব্যবহারকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহের সূচনা হয়।
বন্দুকের কার্তুজ (টোটা) একটি মোড়কের মধ্যে থাকত। মোড়কটি দাঁত দিয়ে কেটে বন্দুকের মধ্যে ভরতে হত। এসময় গুজব রটে যে, ওই মোড়কটিতে গোরু ও শুয়োরের চর্বি মাখানো থাকে।
ধর্মচ্যুত হওয়ার ভয়ে হিন্দু ও মুসলমান সিপাহিরা এই কার্তুজ ব্যবহার করতে অসম্মত হয় এবং বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
মঙ্গল পাণ্ডের বিদ্রোহ
বাংলার ব্যারাকপুর সেনাছাউনিতে এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজ সংক্রান্ত ঘটনায় ৩৪নং নেটিভ ইনফ্যান্ট্রি-র সৈনিক মঙ্গল পাণ্ডে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়।
মিরাটে বিদ্রোহ
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৪ এপ্রিল মিরাট সেনানিবাসের ৩নং নেটিভ ক্যাভালরির ৯০ জন সিপাহি এনফিল্ড রাইফেলের চর্বি মাখানো কার্তুজ ব্যবহার করতে অস্বীকার করে। ৯ মে তাদের ৮৫ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মিরাটের সিপাহিরা ১০ মে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
তাই বলা যায়, বিভিন্ন কারণে সিপাহিদের মধ্যে যে অসন্তোষ ছিল কার্তুজের ব্যবহারকে কেন্দ্র করেই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল।