১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো – ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। একপক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহি বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানাভাবে অভিহিত করেছেন।
তো চলুন আজকের মূল বিষয় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো পড়ে নেওয়া যাক।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। |
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। একপক্ষের ঐতিহাসিকরা বলেন, এটি ছিল নিছক সিপাহি বিদ্রোহ। অপরপক্ষ বলেন, এটি ছিল জাতীয় আন্দোলন। তা ছাড়াও কেউ কেউ আবার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামন্ততান্ত্রিক প্রতিবাদ, কৃষক বিদ্রোহ, মুসলিম চক্রান্ত প্রভৃতি নানাভাবে অভিহিত করেছেন।
সিপাহি বিদ্রোহ
ইংরেজ ঐতিহাসিক চার্লস রেক্স, হোমস এবং ভারতীয়দের মধ্যে কিশোরীচাঁদ মিত্র, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে নিছক সিপাহি বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের বক্তব্য-① ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চালিকাশক্তি ছিল সিপাহিরা। তাদের অসন্তোষ থেকেই বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল। ② এই বিদ্রোহে ভারতীয় জাতীয় চেতনার অগ্রদূত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি যোগদান করেনি বা ভারতের সমস্ত অঞ্চলের রাজারা আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। [
জাতীয় আন্দোলন
ঐতিহাসিক নর্টন, জন কে, কার্ল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগদান করেছিল; বিদ্রোহীরা দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ‘সম্রাট’ বলে ঘোষণা করে ভারতবর্ষে এক নতুন শাসনব্যবস্থা স্থাপনে সচেষ্ট হয়েছিল।
ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম
স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর সাভারকর ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে অভিহিত করেছেন।
সামন্ততান্ত্রিক বিদ্রোহ
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের কারণ ‘হিসেবে অনেকেই সামন্তদের অসন্তোষকে চিহ্নিত করেছেন। ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার একে সামন্ততন্ত্রের মৃত্যুকালীন আর্তনাদ বলে অভিহিত করেছেন।
মুসলিম চক্রান্ত
ঐতিহাসিক আই এইচ কুরেশি ও সৈয়দ মইদুল হক ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে মুসলিম চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছেন। তারা এই বিদ্রোহে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের পুনঃপ্রতিষ্ঠা লক্ষ করে এরূপ মন্তব্য করেছেন।
মূল্যায়ন
হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং অধ্যাপক সুশোভন সরকার এই বিদ্রোহকে জাতীয় সংগ্রাম বলেই মনে করেন। তাঁরা বলেন, এই বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিদ্রোহীদের দেশের প্রতি ভালোবাসার কোনো অভাব ছিল না।
তা ছাড়া এই বিদ্রোহ শুধুমাত্র সিপাহিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, এতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষও শামিল হয়েছিল।
FAQs On – মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি ও চরিত্র আলােচনা করাে
মহাবিদ্রোহের সময় মুঘল সম্রাট কে ছিলেন?
মহাবিদ্রোহের সময় মুঘল সম্রাট ছিলেন বাহাদুর শাহ ।
লখনৌতে সিপাহী বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন কে?
লখনৌতে সিপাহী বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন বেগম হজরত মহল ।
মহাবিদ্রোহ কত সালে সংঘটিত হয়েছিল?
মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল ১৮৫৭ সালে ।
সিপাহী বিদ্রোহের প্রথম শহীদ কে?
সিপাহী বিদ্রোহের প্রথম শহীদ মঙ্গল পান্ডে ।
আপনি আমাদের একজন মূল্যবান পাঠক। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। -এই বিষয়ে আমাদের লেখনী সম্পূর্ণ পড়ার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।