‘সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে,/সারাটা রাত তারায়-তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে।’ -সারাটা দিন আপনমনে ‘ঘাসের গন্ধ’ মাখা ও ‘তারায় তারায় স্বপ্ন এঁকে’ রাখার তাৎপর্য কী?

'সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে,/সারাটা রাত তারায়-তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে।' -সারাটা দিন আপনমনে 'ঘাসের গন্ধ' মাখা ও 'তারায় তারায় স্বপ্ন এঁকে' রাখার তাৎপর্য কী
‘সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে,/সারাটা রাত তারায়-তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে।’ -সারাটা দিন আপনমনে ‘ঘাসের গন্ধ’ মাখা ও ‘তারায় তারায় স্বপ্ন এঁকে’ রাখার তাৎপর্য কী?

গ্রামে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা

আবহমান কাল ধরে মানুষের ঘরে তথা জন্মভূমিতে ফেরার টান কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অনুভবে ধরা পড়েছে ‘আবহমান’ কবিতায়। আসলে বিদেশ-বিভুঁই আমাদের বিলাসিতা দিতে পারে, দিতে পারে অর্থ-খ্যাতি-যশ পর্যাপ্ত পরিমাণে। কিন্তু ‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’ বাংলার ছোটো ছোটো গ্রামগুলি আবহমান কাল ধরে যে অকৃত্রিম আনন্দের উপাচার সাজিয়ে রাখে, তার কণামাত্র আয়োজন করতে পারে না বলে প্রবাসীরা বারে বারে ‘নিবিড় অনুরাগে’ ফিরে আসে এ বাংলায়। গ্রামজীবনের সঙ্গে তথা প্রকৃতির সঙ্গে লগ্ন হয়ে মানুষের বেঁচে থাকার স্বাদ এবং সাধ ফুরোয় না। কবি খেয়াল করেন বঙ্গজন যুগ যুগ ধরে–

“সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে, 
সারাটা রাত তারায় তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে।”

তাৎপর্য

এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করার সুবাদে বঙ্গজনের প্রতিটি দিন এবং রাত বড়োবেশি করে প্রকৃতিলগ্ন। সে যখন মাটির কাছাকাছি তথা বাস্তবের কাছাকাছি থাকে তখনও সে প্রকৃতির সাহচর্যে বেঁচে থাকে, আবার যখন স্বপ্নের আকাশ খুঁজতে চায় তখনও প্রকৃতিই তাকে প্রশ্রয় দেয়। দিনের আলোয় ঘাসের গন্ধ মাখতে কিংবা রাতের তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখতে এই বাংলাই যেন তাকে হাতছানি দেয়। তাই বঙ্গবাসী দিন এবং রাতের সব সৌন্দর্যটুকু আপন মনে উপভোগ করে। এভাবেই বঙ্গপ্রকৃতি হয়ে ওঠে তার আত্মার আত্মীয়। এই মাতৃভূমির সঙ্গে তৈরি হয় তার অবিচ্ছেদ্য নাড়ির টান, যে টানে সে বারে বারে হারিয়ে গিয়েও ফিরে আসে এই বাংলায়।

Leave a Comment