সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে দীপালি সংঘের অবদান লেখো। |
ভূমিকা
বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন ঘটে। বাংলা সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের উর্বরভূমিতে পরিণত হয়। স্বদেশি আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটলেও বিপ্লববাদ ফল্গুধারার মতো বয়ে যেতে থাকে। এই পটভূমিতে বাংলায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে দীপালি সংঘের মতো একটি নারী বিপ্লবী সংগঠন গড়ে ওঠে।
দীপালি সংঘের প্রতিষ্ঠা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী লীলা নাগ (রায়) ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত দশকের আন্দোলন ও তাতে নারীসমাজের ভূমিকা এবং ঢাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাঁকে এই সংঘ প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করে।
দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য
দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল-
[1] নারীদের বিপ্লবী সংগ্রামের জন্য তৈরি করার লক্ষ্যে এবং নারীদের সাহস ও শক্তি বাড়ানোর জন্য এখানে শরীরচর্চা, লাঠিখেলা, অস্ত্রচালনা প্রভৃতির শিক্ষা দেওয়া হত।
[2] নারীদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটানো এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। দীপালি সংঘের উদ্যোগে অনেকগুলি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
দীপালি সংঘের কার্যাবলি
‘স্টাডি সার্কেল’ প্রতিষ্ঠা: দীপালি সংঘের কর্মকর্তারা এই সংঘের কার্যক্রম বিস্তারের জন্য পাড়ায় পাড়ায় স্টাডি সার্কেল গড়ে তোলেন। এই কার্যক্রমে ধারাবাহিকভাবে অনেক স্কুল, শিল্পশিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষার কেন্দ্র গড়ে ওঠে।
দীপালি শিল্প প্রদর্শনী: দীপালি সংঘের উদ্যোগে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয় দীপালি শিল্প প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী বাংলার নারীদের সামনে নারী মুক্তিসংগ্রামের নবদিগন্ত উন্মোচন করে।
দীপালি ছাত্রী সংঘ: ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে লীলা নাগ দীপালি ছাত্রী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল ভারতবর্ষের প্রথম ছাত্রী প্রতিষ্ঠান। এই সংঘের মাধ্যমে ছাত্রীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা হত।
মূল্যায়ন
দীপালি সংঘের পতাকাতলে দলে দলে নারীরা সমবেত হয়। লীলা নাগের প্রচেষ্টায় দীপালি সংঘের কার্যকলাপ বাংলা থেকে আসাম পর্যন্ত বিস্তারলাভ করে।