মুদ্রণের ক্ষেত্রে চার্লস উইলকিনস-এর অবদান লেখো

মুদ্রণের ক্ষেত্রে চার্লস উইলকিনস-এর অবদান লেখো
মুদ্রণের ক্ষেত্রে চার্লস উইলকিনস-এর অবদান লেখো।

ভূমিকা

অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে তথা বাংলার মুদ্রণ জগতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন চার্লস উইলকিনস। তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে রাইটার হিসেবে যোগদান করেছিলেন। চার্লস উইলকিনস-এর আগে উইলিয়ম বোল্টস বাংলা সচল হরফ তৈরি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

বাংলা হরফের নির্মাণ

১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে উইলকিনস ভারতবর্ষে আসেন। তিনি পারসি, সংস্কৃত এবং বাংলায় যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। নাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেডের ‘এ গ্রামার অফ দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’ গ্রন্থটি ছাপানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস তাঁকে নির্দেশ দেন। গ্রন্থটি ছাপানোর জন্য বাংলা হরফ প্রস্তুত করা হয়। হুগলির ছাপাখানায় উইলকিনসের তত্ত্বাবধানে পঞ্চানন কর্মকারের ছেনিকাটা বাংলা টাইপ প্রথম ব্যবহার করা হয়। এই বাংলা হরফের আবিষ্কারকেই বাঙালির নবজাগরণের প্রথম শুভ সূচনা বলা যেতে পারে।

ছাপাখানা প্রতিষ্ঠায় উইলকিনসের উদ্যোগ গ্রহণ

এই সময় হিকির ক্রমাগত আক্রমণে বিরক্ত হয়ে হেস্টিংস এবং কোম্পানির অন্যান্য কর্তৃপক্ষ উপলব্ধি করেন যে, তাদের নিজেদেরই একটি ছাপাখানা থাকা প্রয়োজন। উইলকিনসকে একটি ছাপাখানা স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে তিনি কোম্পানির ছাপাখানার প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে এই ছাপাখানাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর তত্ত্বাবধানে বাংলার ছাপাখানায় নানান দিক থেকে অভূতপূর্ব উন্নতি পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়।

উপসংহার

পৃথিবীতে যিনি প্রথম সঞ্চালনযোগ্য মুদ্রাক্ষর প্রবর্তন করে মুদ্রণের জগতে যুগান্তর নিয়ে এসেছিলেন সেই গুটেনবার্গের কথা স্মরণ করে চার্লস উইলকিনসকে বাংলার মুদ্রণ জগতে তাঁর অবদানের জন্য ‘বাংলার গুটেনবার্গ’ নামে অভিহিত করা হয়।

Leave a Comment