‘মুক্ত হইব দেব-ঋণে মোরা মুক্তবেণীর তীরে।’ দেব-ঋণ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তা থেকে বাঙালিরা কীভাবে মুক্ত হবে বলে কবি মনে করেছেন?

'মুক্ত হইব দেব-ঋণে মোরা মুক্তবেণীর তীরে।' দেব-ঋণ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তা থেকে বাঙালিরা কীভাবে মুক্ত হবে বলে কবি মনে করেছেন
‘মুক্ত হইব দেব-ঋণে মোরা মুক্তবেণীর তীরে।’ দেব-ঋণ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তা থেকে বাঙালিরা কীভাবে মুক্ত হবে বলে কবি মনে করেছেন?
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর ‘আমরা’ কবিতায় বাঙালির ঐতিহ্যময় ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন। বাঙালির অতীত গৌরবের ঔজ্জ্বল্য উদ্ধার করে তিনি সর্বময় বর্তমানকেও তুলে ধরেছেন। অতীত এবং বর্তমানের এই অনন্য মেলবন্ধনে আস্থাবান হয়ে কবি উচ্চারণ করেছেন বাঙালির আশাময় ভবিষ্যতের কথা।

মহামন্ত্র

বাঙালি বিধাতার আশিসপুষ্ট হয়ে বিশ্বব্যাপ্ত হবে। তার এই প্রসারণের ইঙ্গিত অতীতের অতীশ দীপঙ্করের প্রজ্ঞায়, বিজয়সিংহের বাহুবলে, চৈতন্যদেবের ধর্মব্যাখ্যায়, রঘুনাথের কীর্তিতে, বর্তমানের বিজ্ঞানচিন্তায়, বিবেকানন্দের বাণীতে বাঙালি চিরকাল অভেদ ও ঐক্যে বিশ্বাসী। এক জাতি, এক প্রাণ, জগৎ জুড়ে একই মানবের অস্তিত্বে আস্থাবান। তার এই জীবনাদর্শকেই সে বিশ্বময় করবে। কবি তাকেই মিলনের মহামন্ত্র বলেছেন।

বাঙালি ধাতার আশিসপুষ্ট। বিধাতা তাকেই জগদসভার সৃজনশীল কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। দেবতা সত্যের প্রতিরূপ। বাঙালিকে ঋতপথ গমনের দায়িত্ব তিনি অর্পণ করেছেন। তাই বাঙালির দেব-ঋণ।

তাৎপর্য

বাঙালির অতীত-বর্তমানের মতো ভবিষ্যৎও গৌরবময় হবে। বাঙালির মহামিলন ও সত্যাগ্রহের মন্ত্র সমস্ত জগদ্বাসীকে দীক্ষিত করে হিংসা-বিদ্বেষ-পরস্বলোভ দূর করবে। জগৎকে সে দেখাবে মানবতার প্রকৃত স্বরূপ। এই কর্তব্যপালনেই বাঙালি দেবঋণ মুক্ত হবে এবং নিজের মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে জগৎকেও মুক্তি দিতে সক্ষম হবে।

Leave a Comment