মাস্টারদা সূর্য সেন স্মরণীয় কেন

মাস্টারদা সূর্য সেন স্মরণীয় কেন
মাস্টারদা সূর্য সেন স্মরণীয় কেন

ভূমিকা

ভারতের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাস্টারদা সূর্য সেন বিশেষভাবে স্মরণীয়। তিনি চট্টগ্রাম জাতীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন বলে ‘মাস্টারদা’ নামে পরিচিত হয়েছেন। মাস্টারদা সূর্য সেনের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হল ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামের দুটি অস্ত্রাগার লুণ্ঠন।

মাস্টারদার আদর্শ

মাস্টারদা বিশ্বাস করতেন যে, সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ব্রিটিশদের ভারত থেকে বিতাড়িত করা যাবে।

মাস্টারদার অনুগামী

মাস্টারদার অনুগামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, অনন্ত সিং, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত প্রমুখ।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ এপ্রিল রাত ১০টায় গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে ৬ জন বিপ্লবীর একটি দল পুলিশের অস্ত্রাগার লুঠ করে। লোকনাথ বলের নেতৃত্বে ১০ জন সদস্যের অপর একটি দল সেনাবাহিনীর অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে। বিপ্লবীরা রেলচলাচল, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে চট্টগ্রামে ‘অস্থায়ী স্বাধীন সরকার’ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করে।

জালালাবাদের মুক্তিযুদ্ধ

অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পর বিপ্লবীরা জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছিল। ২২ এপ্রিল ব্রিটিশ পুলিশ জালালাবাদের পাহাড়ে আক্রমণ চালালে ৮০ জনের বেশি পুলিশ ও ১২ জন বিপ্লবী নিহত হন এবং বিপ্লবীদের অনেকে পালিয়ে যেতেও সক্ষম হন।

গ্রেফতার

তিন বছর আত্মগোপনের পর ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাস্টারদা গ্রেফতার হন এবং বিচারে ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি তাঁর ফাঁসি হয়।

মূল্যায়ন

বিপ্লবী মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন ও জালালাবাদের যুদ্ধে যে বীরত্ব দেখিয়েছিলেন তা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার জালালাবাদের মুক্তিযুদ্ধকে ‘ইংরেজদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের প্রথম দৃষ্টান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।

Leave a Comment