মাতঙ্গিনী হাজরা ইতিহাসে স্মরণীয় কেন

মাতঙ্গিনী হাজরা ইতিহাসে স্মরণীয় কেন
মাতঙ্গিনী হাজরা ইতিহাসে স্মরণীয় কেন?

ভূমিকা

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীল। এই আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেও তার মধ্যে সর্বাধিক মাত্রায় নজর কেড়েছিল ভারতীয় নারীরা। গান্ধিজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের শিক্ষিত নারীদের পাশাপাশি সাধারণ নারীসমাজও দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেন।

মাতঙ্গিনী হাজরার ভূমিকা

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী মাতঙ্গিনী হাজরা। ইতিহাসে তিনি ‘গান্ধিবুড়ি’ নামে বিশেষভাবে স্মরণীয়।

পূর্ব পরিচয়

১৯৪২-এর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম হয় ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর জেলার এক কৃষক পরিবারে। স্বল্প বয়সে তিনি বিধবা হন।

আন্দোলনে অংশগ্রহণ

বঙ্গভঙ্গবিরোধী স্বদেশি আন্দোলন এবং আইন অমান্য আন্দোলনে মাতঙ্গিনী হাজরার অংশগ্রহণ ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এসময় ৬ মাসের জন্য তিনি কারাবরণও করেছিলেন।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ৭৩ বছরের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনী হাজরা মেদিনীপুরের তমলুক থানা দখলের জন্য ছয় হাজার নরনারীর এক মিছিলে নেতৃত্ব দান করেন। শহরের প্রান্তে পৌঁছোলে ব্রিটিশ পুলিশের তরফ থেকে মিছিল বন্ধের নির্দেশ আসে। পুলিশি নির্দেশ অমান্য করে এই মিছিল অগ্রসর হলে মাতঙ্গিনী হাজরাকে গুলি করা হয়। তিনবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা হাতে নিয়ে তিনি শহীদের মৃত্যুবরণ করেন।

উপসংহার

পুলিশি অত্যাচার ও আক্রমণ সহ্য করেও মাতঙ্গিনী হাজরা যেভাবে নির্ভীক চিত্তে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তা ভারতীয় নারীসমাজের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ। এই কারণে তিনি ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।

Leave a Comment