ভার্সাই সন্ধির প্রকৃতি সম্পর্কে একটি সমালোচনামূলক নিবন্ধ লেখো

ভার্সাই সন্ধির প্রকৃতি সম্পর্কে একটি সমালোচনামূলক নিবন্ধ লেখো
ভার্সাই সন্ধির প্রকৃতি সম্পর্কে একটি সমালোচনামূলক নিবন্ধ লেখো

ভূমিকা : 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে 1919 খ্রিস্টাব্দের 28 জুন ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। এটি ছিল একটি বিতর্কিত সন্ধি। নানা ঐতিহাসিক বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এর সমালোচনা করেছেন।

সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভার্সাই সন্ধি :

① ভার্সাই সন্ধি একটি জবরদস্তিমূলক সন্ধি: 

জোর- জবরদস্তি করেই ভার্সাই সন্ধি জার্মানির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। অন্যায়ভাবে জার্মানির অর্থ ও সম্পদ হরণ করা হয়। এই সন্ধি যে একটি জবরদস্তিমূলক সন্ধি ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে জার্মানির 25 হাজার বর্গমাইল এলাকা কেড়ে নেওয়া হয়। এর ফলে জার্মানি তার 70 লক্ষ জনবল হারিয়েছিল।

② অমানবিক সন্ধি: 

ভার্সাই সন্ধি ছিল এক ‘অমানবিক সন্ধি’। মিত্রশক্তি এক অমানবিক প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য জার্মানির ওপর এই সন্ধি চাপিয়ে দিয়েছিল।

③ জাতীয়তা-বিরোধী সন্ধি: 

ভার্সাই সন্ধি এক জাতীয়তা বিরোধী পরিবেশ তৈরি করে। তাই একে জাতীয়তা- বিরোধী সন্ধি বলা যায়। কেন-না এর ফলে প্যারিস শান্তি সম্মেলনের নেতৃমণ্ডলী অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, চেকোশ্লোভাকিয়ার জার্মানদের প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখান; পোলিশ করিডরের মাধ্যমে জার্মানি দ্বি-খণ্ডিত হয়। এইভাবে জার্মান জাতীয়তাবাদ আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

④ অনমনীয় সন্ধি: 

ভার্সাই সন্ধি ছিল এক ‘অনমনীয় সন্ধি’। এই সন্ধিতে যে অনমনীয়তা দেখানো হয়েছিল-তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষিত তৈরি করে দিয়েছিল।

⑤ অনুদার সন্ধি: 

ভার্সাই সন্ধির মাধ্যমে মিত্রপক্ষ জার্মানির প্রতি যে অনুদারতা দেখিয়েছিল-তা ছিল অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর বিরুদ্ধে সমগ্র জার্মানি জুড়ে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জার্মানিরাও এর জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হতে থাকে।

⑥ অর্থ আদায়কারী সন্ধি:

ভার্সাই সন্ধি অন্যায়ভাবে জার্মানির ওপর চাপিয়ে দিয়ে অর্থ আদায় করা হয়। তাই জার্মানি বিশ্বশান্তির পক্ষে যোগ দেয়নি।

Leave a Comment