ভারত ছাড়ো আন্দোলন কেন ব্যর্থ হয়েছিল
|
ভূমিকা
ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বশেষ অধ্যায়। গান্ধিজির উচ্চারিত ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ ধ্বনির মধ্য দিয়ে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্ট ভোরে আন্দোলনের সূচনা হয়।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ
তীব্রগতিতে চলা এই আন্দোলন কিছুদিনের মধ্যেই তার গতি হারিয়ে ফেলে ও শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এই আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণগুলি হল–
[1] ব্রিটিশের তীব্র দমননীতি: আন্দোলনের শুরু থেকেই ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকারীদের উপর নিষ্ঠুর ও অমানবিক অত্যাচার চালাতে শুরু করে, যে কারণে আন্দোলনের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।
[2] উপযুক্ত নেতার অভাব: ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে গান্ধিজির নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু আন্দোলনের শুরুতেই দেশের প্রথম সারির নেতাদের ও গান্ধিজিকে গ্রেফতার করা হয়। উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে ও আন্দোলনকারীদের কোনো সংগঠন, পরিকল্পনা বা কর্মসূচি না থাকায় আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
[3] কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ভূমিকা: মুসলিম লিগ, কমিউনিস্ট পার্টি, হিন্দু মহাসভা, অনুন্নত সম্প্রদায়ের দল প্রভৃতি সংগঠনের বহু মানুষ এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে ছিল। বিভিন্ন সংগঠনের অসহযোগিতার ফলে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যর্থতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।
[4] প্রাকৃতিক দুর্যোগ : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার ফলে মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয় ও অগণিত মানুষ মারা যায়। এরপর ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে সারা বাংলায় ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলির ফলে বিপর্যস্ত মানুষ আন্দোলন সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়ে। ফলে আন্দোলন দুর্বল হয়ে যায়।