ভাইকম সত্যাগ্রহ টীকা লেখো

ভাইকম সত্যাগ্রহ টীকা লেখো
ভাইকম সত্যাগ্রহ টীকা লেখো

ভূমিকা

দক্ষিণ ভারতে বিশেষত কেরলে সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে যেসকল আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল, তার মধ্যে ভাইকম সত্যাগ্রহ ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

ভাইকম সত্যাগ্রহ

দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ত্রিবাঙ্কুরের ভাইকম মন্দির চত্বরে কেশব মেননের নেতৃত্বে এই সত্যাগ্রহের সূচনা হয়।

আন্দোলন পরিচালনা

১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ মার্চ দলিত এজহাবারা হিন্দু মন্দিরে প্রবেশের উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলে। সত্যাগ্রহীদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মন্দির কর্তৃপক্ষ আগে থেকে মন্দির চত্বর ঘিরে রেখেছিল, যাতে দলিতরা প্রবেশ করতে না পারে। ইংরেজ সরকারও মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ সমর্থন করে সত্যাগ্রহীদের বাধা প্রদানের চেষ্টা করে।

কংগ্রেসের ভূমিকা

দক্ষিণ ভারতে অস্পৃশ্যতার উচ্ছেদের জন্য দলিত সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানে কংগ্রেস বর্ণহিন্দুদের মধ্যে অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে জনমত জাগরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। গান্ধিজি নিজে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ভাইকম পরিদর্শনে যান। দলিত শ্রেণির এই আন্দোলনটি সারা ভারতব্যাপী প্রসারিত হয়। পুলিশ সত্যাগ্রহীদের এই আন্দোলন দমনের চেষ্টা করে এবং বহু নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।

পরিণতি

ভাইকম সত্যাগ্রহের পর দলিত শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কেরলে গুরুভাইয়ুর মন্দির-কে কেন্দ্র করে চরম আকার ধারণ করে। দলিত শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করে। শেষপর্যন্ত দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ত্রিবাঙ্কুরের রাজা তিরুনাল বলরাম বর্মা ও তাঁর দেওয়ান সি পি রামস্বামী আয়ার ‘Temple Entry Proclamation’ জারি করে দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকারকে স্বীকৃতি দেন।

উপসংহার

এভাবে দলিতরা মন্দিরে প্রবেশের অধিকার লাভ করে। কিন্তু আইনগতভাবে ভাইকম সত্যাগ্রহ ও অন্যান্য দলিত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার স্বীকৃত হলেও জাতপাতভিত্তিক সামাজিক অবস্থান এবং উচ্চবর্ণের প্রাধান্যের জন্য দলিতরা অদ্ভুতই থেকে যায়।

Leave a Comment