বিশ শতকে ভারতে ছাত্র-আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে লেখো। |
ভূমিকা
বিশ শতকে ভারতে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের অপরিহার্য অংশ হিসেবে ছাত্র-আন্দোলনের সূচনা হয়। বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রথম ছাত্র-আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রসমাজের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনগুলির মাধ্যমে ছাত্ররা তাদের রাজনৈতিক দাবিদাওয়া পূরণের লক্ষ্যে অগ্রসর হয়।
বিশ শতকে ভারতে ছাত্র-আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যসমূহ
বিশ শতকে ভারতে ছাত্র-আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল-
জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা
বিশ শতকে ভারতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনগুলিতে ছাত্রসমাজের যোগদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত স্বদেশি আন্দোলন, অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলনে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্জন, পিকেটিং, মিছিল-মিটিং প্রভৃতি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল ছাত্র-আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রভাব
ভারতে ছাত্র-আন্দোলনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রভাব। রুশ বিপ্লব ভারতের ছাত্রসমাজকে প্রবলভাবে আলোড়িত করেছিল এবং পরবর্তীকালে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ছাত্র- আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল।
সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ভারতীয় ছাত্রসমাজ বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিল। বিভিন্ন গুপ্তসমিতিগুলিতে যোগদানের মাধ্যমে বাংলার ছাত্রসমাজ সশস্ত্র বৈপ্লবিক কাজে অংশগ্রহণ করে।
সমাজসেবামূলক কার্যাবলি
বিশ শতকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা সশস্ত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ ছাড়াও একাধিক সমাজকল্যাণমূলক কাজে ছাত্রদের সক্রিয় উদ্যোগ ও অংশগ্রহণ ছিল ছাত্র-আন্দোলনের অপর একটি বৈশিষ্ট্য।
উপসংহার
এভাবে ভারতবর্ষে সমগ্র বিশ শতক জুড়ে ছাত্র- আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় দেখা গিয়েছিল, যা জাতীয় মুক্তিসংগ্রামকে এক বিশিষ্ট মাত্রা প্রদান করেছিল।