বিপর্যয় (Disaster) কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্য লেখো। |
বিপর্যয় (Disaster) :
অর্থ :
‘Disaster’ শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ‘Desastre’ থেকে। যেখানে, ‘Des’ কথার অর্থ ‘Bad’ বা ‘Evil’ (খারাপ বা মন্দ) এবং ‘aster’ কথার অর্থ ‘Star’ (তারা)। সুতরাং, ‘Desastre’-এর অর্থ ‘অশুভ তারা’ (Evil Star)। প্রাচীনকালে মানুষ বিশ্বাস করত যে, অশুভ তারার প্রকোপেই প্রকৃতিতে বিপর্যয় নেমে আসে।
সংজ্ঞা:
প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদি এমন কোনো বিপজ্জনক ঘটনা যা মানুষের দুর্গতির কারণ হয় এবং বাইরের সাহায্য ছাড়া যার মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না, তাকেই বিপর্যয় বলা হয়।
উদাহরণ: দুর্যোগের চরম পরিণতি হল বিপর্যয়। ভূমিকম্প, বন্যা প্রভৃতি দুর্যোগের কারণে যখন ব্যাপক হারে ক্ষয়ক্ষতি ও জীবনহানি ঘটে তখন তা বিপর্যয়ের রূপ নেয়। যেমন 2004 সালে ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সুনামি দ্বারা ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের বিপর্যয়।
বিপর্যয়ের বৈশিষ্ট্য :
• উপাদান: বিপর্যয় প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণের ফল।
• ব্যাপ্তি: বিপর্যয় হতে পারে হঠাৎ, অপ্রত্যাশিত ও ব্যাপকতর। বিপর্যয় বৃহৎ স্কেলে, অর্থাৎ, ব্যাপক হারে সংঘটিত হয়।
• প্রভাব: মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয়।
• ক্ষয়ক্ষতি: প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।
• বিপন্নতা: বিপর্যয় অধ্যুষিত এলাকায় মানুষ নিজেকে বিপন্ন বোধ করে।
• জীবনযাত্রার অবনতি: এই অবস্থায় সমাজের প্রয়োজনে লাগে আশ্রয়, স্যানিটেশন, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও সামাজিক পরিচর্যা। ফলে বাইরের সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
• পরিকাঠামোর অবনতি : বিপর্যয়ের ফলে অত্যাবশ্যক পরিকাঠামো, যেমন স্বাস্থ্য, পরিবহণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।