বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো

বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো
বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো

ভূমিকা

বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনা জগতের উন্নতিকল্পে তিনি ছিলেন এক সচেতন মুদ্রাকর, প্রকাশক ও পুস্তক ব্যবসায়ী। তাঁর প্রচেষ্টায় যেমন বাংলা বর্ণমালার সংস্কার হয়, তেমনি বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়।

‘সংস্কৃত প্রেস’ তৈরিতে ভূমিকা

বিদ্যাসাগর ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সঙ্গে ৩২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে ‘সংস্কৃত প্রেস’ নামে এক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রেস থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা বই হল ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ (১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দ)। বর্ণপরিচয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগও এই প্রেস থেকেই ছাপা হয়।

সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটারি স্থাপন

মুদ্রণ ও প্রকাশনার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যাসাগর সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটারি স্থাপন করেন ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে। বাংলা বইয়ের ব্যাবসার ক্ষেত্রে এই সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।

কলিকাতা পুস্তকালয় প্রতিষ্ঠা

পরবর্তী সময়ে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র কলিকাতা পুস্তকালয় নামে এক নতুন বইয়ের দোকান খোলেন। তাঁর নিজের ও কপিরাইটের বইগুলি এই সংস্থা থেকে প্রকাশিত হতে থাকে। তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রয় সংস্থার মালিক হয়ে বাংলা বইয়ের ব্যাবসার পথপ্রদর্শক হিসেবে খ্যাত হয়ে আছেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

মূল্যায়ন

বিদ্যাসাগর একাধারে বই লিখেছিলেন, ছাপিয়েছিলেন এবং তা বিক্রির জন্য বইয়ের দোকানও খুলেছিলেন। শিক্ষাসংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাবসায়িক সাফল্যলাভও যে অসম্ভব নয়, তা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। এইভাবে বাংলা বইয়ের মুদ্রণ ও প্রকাশনার ব্যাবসায়িক ভিত্তি সুদৃঢ় করে গড়ে দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর।

Leave a Comment