‘বাংলার নীল সন্ধ্যা -কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে;’- বাংলার নীলসন্ধ্যার বর্ণনায় কেশবতী কন্যার উপস্থিতি কতটা তাৎপর্যপূর্ণ

'বাংলার নীল সন্ধ্যা -কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে;'- বাংলার নীলসন্ধ্যার বর্ণনায় কেশবতী কন্যার উপস্থিতি কতটা তাৎপর্যপূর্ণ
‘বাংলার নীল সন্ধ্যা -কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে;’- বাংলার নীলসন্ধ্যার বর্ণনায় কেশবতী কন্যার উপস্থিতি কতটা তাৎপর্যপূর্ণ?

সান্ধ্যপ্রকৃতি

‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ সময়ের আবহমান হৃদয় থেকে বাংলাদেশের একটি বিশেষ সন্ধ্যাকে কবিতার বিষয় নির্বাচন করে তাকেই আবার আবহমানকালের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আলোচ্য কবিতায় কবি প্রতিদিন প্রকৃতির নিয়মে বাংলার বুকে নেমে আসা সন্ধ্যার অপরূপ বর্ণনা করেছেন। বঙ্গপ্রকৃতির এই সান্ধ্য-অধিবেশনে লেশমাত্র বৈভব আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই, শুধুই সমাহিত শান্তির আশ্বাস তার রূপকে অতুলনীয় ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ করেছে।

কেশবতী কন্যার তাৎপর্য পূর্ণ তুলনা

‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের সন্ধ্যার মায়াবী মেদুরতাকে প্রকাশ করতে নীল রংটির ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশের সব স্থানে, কবির মনের সবকোণে সন্ধ্যার সৌন্দর্য যেভাবে মোহময় আবেশ তৈরি করে তাতে আপ্লুত হয়ে যান কবি। মোহাবিষ্ট কবির মন পাড়ি দেয় রূপকথার রাজ্যে। কবির মনে হয় নীল সন্ধ্যার সুদূরবিস্তারি সৌন্দর্য যেন কেশবতী কন্যার চুল; যা কবির মুখের উপর, চোখের উপর খেলা করে। যার অজস্র চুলের চুম্বন অবিরত ঝরে পড়ে বঙ্গপ্রকৃতির সব স্থানে হিজলে-কাঁঠালে-জামে। রূপসী কেশবতী কন্যার চুলের বিন্যাসে ঝরে স্নিগ্ধ গন্ধ। আসলে বাংলাদেশের নিসর্গপ্রকৃতির অপার সৌন্দর্য এবং বিচিত্র গন্ধে আপ্লুত কবি-মন অনিবার্যভাবে আশ্রয় খুঁজে পায় রূপকথার কল্পজগতে। পৃথিবীর আর কোথাও কবি এহেন সৌন্দর্যের স্বাদ পাননি, আর পাওয়া যাবে বলেও বিশ্বাস করেন না। সুতরাং আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠলে বঙ্গপ্রকৃতির উপর নেমে আসা মায়াবী মেদুরতা সৃষ্টিকারী নীলাভ সন্ধ্যার সঙ্গে মোহময়ী কেশবতী কন্যার তুলনা তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।

Leave a Comment