বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনে অনুশীলন সমিতির কী ভূমিকা ছিল? |
ভূমিকা
বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লববাদের প্রসারে গুপ্তসমিতির ভূমিকা ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই গুপ্তসমিতিগুলির মাধ্যমেই মূলত বাংলার ছাত্রসমাজ সশস্ত্র বৈপ্লবিক কাজে অংশগ্রহণ করে। বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলন প্রসারে এরকমই এক গুপ্তসমিতি হল অনুশীলন সমিতি।
বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনে অনুশীলন সমিতির ভূমিকা
বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলন পরিচালনায় অনুশীলন সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
অনুশীলন সমিতির প্রতিষ্ঠা
১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মার্চ সতীশচন্দ্র বসু এবং ব্যারিস্টার প্রমথনাথ মিত্র ‘অনুশীলন সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অনুশীলন তত্ত্ব’-এর আদর্শে অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একই বছরে ১০৮ সি আপার সার্কুলার রোডে অরবিন্দ ঘোষের নির্দেশে যতীন্দ্রনাথ বিপ্লবী গুপ্তসমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এই দুই গুপ্তসমিতি যুক্ত হয়ে অনুশীলন সমিতি নামে খ্যাত হয়।
অনুশীলন সমিতির উদ্দেশ্য
[1] শরীররচর্চা ও লাঠিখেলার মাধ্যমে যুবশক্তির মধ্যে ক্ষাত্রশক্তির উন্মেষ ঘটানো।
[2] ইংরেজ কর্মচারীদের হত্যার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করা- সর্বোপরি ভারতবর্ষ থেকে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানোই ছিল অনুশীলন সমিতির মূল উদ্দেশ্য।
অনুশীলন সমিতির কার্যাবলি
[1] ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনুশীলন সমিতি অধিকতর সক্রিয় হয়ে ওঠে।
[2] এই দলের সদস্যরা গোপনে বিপ্লবী কার্যকলাপ চালাতেন। পরবর্তীকালে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে অনুশীলন সমিতির সদস্যদের একাংশ যুগান্তর পত্রিকার মাধ্যমে বিপ্লবী আন্দোলনের প্রচার করেন এবং যুগান্তর দল নামে পরিচিত হয়।
উপসংহার
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সাময়িকভাবে বৈপ্লবিক কাজকর্ম স্থগিত থাকলেও পরবর্তীকালে পুনরায় দলের বিপ্লববাদ সক্রিয় হয়ে ওঠে।