‘নোঙর’ কবিতার বিষয়বস্তু অবলম্বনে কবির মানসিকতার পরিচয় দাও |
ভূমিকা
অবিরাম দাঁড় টানা
গণ্ডিবদ্ধ তথা গতানুগতিক জীবনে কবি আবদ্ধ থাকতে চান না। তিনি তরি নিয়ে দূর সমুদ্রপারে পাড়ি দিতে চান। কিন্তু তাঁর তরি নোঙরে বাঁধা পড়ে গেছে–
সমুদ্রের ঢেউগুলি কবির কাছে গতির বার্তা নিয়ে আসে। কবি সারারাত প্রাণপণে অবিরাম দাঁড় টেনে চলেন। মাস্তুলে পাল বাঁধেন, তারা দেখে দিক ঠিক করেন। কিন্তু তরিখানি তাঁর সচল হয় না।
আশা পূরণের ব্যর্থ চেষ্টা
সাংসারিক, সামাজিক মানুষ হিসেবে কবি নানারূপ কাজের মায়ামমতার বন্ধনে বাঁধা। নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধ নিশীথে তাঁর কবিসত্তা জাগরিত হয়। সুদূর কল্পলোেক তাঁকে ডাকে। সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে চলে যেতে চান তিনি নতুন জগতে। নিজের সাহিত্যসম্পদে তরি ভরে নিয়ে নব নব লোকে বিকীর্ণ করে দিতে চান। যে আশা পূর্ণ হবে না কখনও, তারই জন্য অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যান জীবনভর। অবশেষে বন্ধনমুক্তির ব্যর্থতায় বিষণ্ণ, অসহায় হয়ে পড়েন।
উপসংহার
এই অসহায়তা, বিষণ্ণতা রোমান্টিক কবির লক্ষণ। অজিত দত্ত আদ্যন্ত রোমান্টিক কবি, চিরচঞ্চল তাঁর মন। বাস্তব ও কল্পনার সংঘর্ষে, স্থিতি ও গতির দ্বন্দ্বে কবির সেই চিরচঞ্চল, অতৃপ্ত, বিষণ্ণ, রোমান্টিক মানসিকতা আলোচ্য কবিতায় ধরা পড়েছে।