নেপোলিয়নের পতনের পিছনে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কতটা দায়ী ছিল

নেপোলিয়নের পতনের পিছনে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কতটা দায়ী ছিল
নেপোলিয়নের পতনের পিছনে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা কতটা দায়ী ছিল
সম্রাট নেপোলিয়ান স্থলযুদ্ধে ইংল্যান্ডকে পরাস্ত করতে না পেরে অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত করার জন্য মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা ঘোষণা করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল ইংল্যান্ডে ইউরোপের একচেটিয়া বাণিজ্য হ্রাস করে সেই স্থান ফ্রান্স কর্তৃক দখল ও রপ্তানিজাত প্রচুর মুনাফা অর্জন করা। মহাদেশীয় অবরোধ 1806 খ্রিস্টাব্দে বার্লিন ও মিলানের ডিক্রি দ্বারা জারি করা হয়।

সাম্রাজ্যবাদী নেপোলিয়ান

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবরোধ কার্যকারী করার জন্য নেপোলিয়ানকে নিরপেক্ষ দেশগুলিকে অধিকার করতে হয়। ফলে তাঁর সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র প্রকট হয়ে পড়ে।

সেনাবাহিনীর দুর্বলতা

ইউরোপের বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে সৈন্য সংস্থাপন করলে তাঁর সেনাদল দুর্বল হয়ে পড়ে।

ক্যাথোলিক জগতে জনপ্রিয়তা হ্রাস

পোপ মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা স্বীকার করতে রাজি না হলে নেপোলিয়ান পোপকে বন্দি করে ক্যাথোলিক জগতে তাঁর জনপ্রিয়তা হারান।

স্পেনের সঙ্গে যুদ্ধ

স্পেন মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা স্বীকার করতে রাজি না হলে নেপোলিয়ান স্পেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং তা জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ স্পেনবাসীর ‘জাতীয় যুদ্ধে’ পরিণত হয় (1808-13)। পোর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের সাহায্যে স্পেন এই যুদ্ধে জয়ী হয়। এই যুদ্ধে পরাজয় নেপোলিয়ানের মর্যাদাহানি ঘটায়। পরবর্তীকালে নেপোলিয়ান স্বীকার করেন ‘স্পেনীয় ক্ষত’ই তাঁকে ধ্বংস করেছিল।

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ

রাশিয়ার জার অবরোধ তুলে নেওয়ায় নেপোলিয়ানের সঙ্গে জারের বিরোধ দেখা দেয়। রাশিয়ার সঙ্গে এই সংঘর্ষে (1812 খ্রিস্টাব্দে) নেপোলিয়ান চরম ব্যর্থতার সম্মুখীন হন। তাঁর ‘গ্র্যান্ড আর্মি’ ধ্বংস হয়ে যায়।

ইংল্যান্ডের উপর প্রভাব

মহাদেশীয় ব্যবস্থা দ্বারা প্রাথমিক পর্যায়ে ইংল্যান্ড সংকটের সম্মুখীন হলেও অতি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ফ্রান্স উন্নতমানের শিল্পোৎপাদন জনিত পণ্যাদির অভাবহেতু একদিকে যেমন ইউরোপের বাজার দখল করতে পারেনি, তেমনি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবে সাধারণ মানুষ সম্রাটের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

Leave a Comment