ধস কাকে বলে? ধস সৃষ্টির কারণগুলি লেখো।

ধস কাকে বলে? ধস সৃষ্টির কারণগুলি লেখো
ধস কাকে বলে? ধস সৃষ্টির কারণগুলি লেখো

ধস (Land Slide): 

পাহাড় বা পর্বতের ঢাল বরাবর পাথরের চাঁই, শিলাচূর্ণ, মৃত্তিকা ও অন্যান্য আলগা পদার্থের মাধ্যাকর্ষণের টানে হঠাৎ নেমে আসা বা খসে পড়াকে ধস বলে। ধস বন্ধ করা যায় না, তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উদাহরণ – পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য এলাকায় বর্ষাকালে ভূমিধস ঘটে।
ধস সৃষ্টির কারণগুলি হল –

ধস সৃষ্টির প্রাকৃতিক কারণ :

• অধিক বৃষ্টিপাত : পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে পাহাড়ি ঢালের মৃত্তিকা ও শিলা ভারী ও আলগা হয়ে পড়ে এবং অভিকর্ষজ টানে নীচের দিকে নেমে আসে।
• ভূমির ঢাল বৃদ্ধি: ভূমির ঢাল বৃদ্ধি পেলে ধস সৃষ্টির প্রবণতা বাড়ে।
• শিলা দুর্বল হয়ে পড়লে পাহাড়ি অঞ্চলে বহু দিন ধরে সূর্যের তাপ, বৃষ্টিপাত, গাছের শিকড়ের চাপ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতির প্রভাবে শিলা ফেটে দুর্বল হয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে ওই দুর্বল পাথরের স্তূপ ধস রূপে নীচের দিকে নেমে আসে।
• মাটির প্রকৃতি: মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি থাকলে মাটির কণাগুলির মধ্যে সংঘবদ্ধতা কম থাকে বলে জল সহজে মাটিতে প্রবেশ করে। ফলে মাটি ভারী হয়ে পড়ে এবং ঢাল বরাবর নেমে আসে।
• ভূমিকম্পের প্রভাব: ভূমিকম্পের ফলে শিলাতে ফাটল ধরে ও শিলা দুর্বল হয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে এই শিলা ঢাল বরাবর ধসে পড়ে।

মনুষ্যসৃষ্ট কারণ :

• অরণ্য ধ্বংস: পার্বত্য অঞ্চলে যথেচ্ছভাবে গাছ কাটার ফলে মাটির বাঁধন আলগা হয় ও ধসের প্রবণতা বাড়ে।
• নগরায়ণ: পাহাড়ের ঢালে অবৈজ্ঞানিক প্রথায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, জলাধার নির্মাণ করার ফলে ধসের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
• ডিনামাইট বিস্ফোরণ : খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান, রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিশেষ করে পাহাড় ও পার্বত্য অঞ্চলে সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর ফলে যে কম্পন হয় তা অনেক সময় ধস সৃষ্টি করে।
• অবৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ : পাহাড়ি অঞ্চলে অবৈজ্ঞানিক প্রথায় ঝুম চাষ, ধাপ চাষ, ঢাল বরাবর চাষ প্রভৃতির ফলে ধসের সৃষ্টি হয়।

Leave a Comment