টীকা লেখো তেভাগা আন্দোলন |
ভূমিকা
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে বামপন্থী রাজনীতির লক্ষ্য হয়ে ওঠে শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনগুলিকে সংগঠিত করা। এই পর্বের আন্দোলনগুলি ছিল মূলত কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে জঙ্গি কৃষক অসন্তোষ। স্বাধীনতাপূর্ব বাংলার কৃষক আন্দোলনগুলির মধ্যে এরকমই এক গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন ছিল তেভাগা আন্দোলন।
তেভাগা আন্দোলনের আন্দোলনের সূচনা
[1] তেভাগা আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি ছিল উৎপন্ন ফসলের ২/৩ ভাগ তাদের দিতে হবে।
[2] ফ্লাউড কমিশনের তেভাগার সুপারিশ কার্যকর করার জন্য বঙ্গীয় প্রাদেশিক কৃষকসভা ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তেভাগা আন্দোলনের ডাক দেয়।
[3] ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় ধান পাকার সময় দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমার রামচন্দ্রপুর গ্রাম থেকেই তেভাগা আন্দোলনের সূচনা হয়।
তেভাগা আন্দোলনের বিস্তার
[1] বাংলার জলপাইগুড়ি, মালদহ, খুলনা, যশোহর, পাবনা, মেদিনীপুর সর্বত্র এই আন্দোলনের দ্রুত বিস্তার ঘটে।
[2] তেভাগা আন্দোলনে প্রায় ৭০ লক্ষ কৃষক, ক্ষেতমজুর ও নারী অংশগ্রহণ করে। কাকদ্বীপের বাতাসী, মহিষাদলের বিমলা মণ্ডল, চারু মজুমদার, অবনী লাহিড়ি প্রমুখের নেতৃত্ব এই আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দিয়েছিল।
তেভাগা আন্দোলনের পরিণতি
সরকারি দমননীতি সত্ত্বেও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষেমানুষ সংঘবদ্ধভাবে এই আন্দোলনে শামিল হয়। এসময় ফজলুল হক মন্ত্রীসভা তেভাগার দাবিকে স্বীকৃতি দেয়। এর ঠিক পরেই আন্দোলনের গতিময়তা কমে যায়। শেষপর্যন্ত ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে বর্গাদার বিল জারি হলে এই আন্দোলনের অবসান ঘটে।