‘জ্ঞানের নিধান আদিবিদ্বান্ কপিল সাঙ্খ্যকার’—কপিলের পরিচয় উল্লেখ করে মন্তব্যটির অর্থ তাৎপর্য বোঝাও

'জ্ঞানের নিধান আদিবিদ্বান্ কপিল সাঙ্খ্যকার'—কপিলের পরিচয় উল্লেখ করে মন্তব্যটির অর্থ তাৎপর্য বোঝাও
‘জ্ঞানের নিধান আদিবিদ্বান্ কপিল সাঙ্খ্যকার’—কপিলের পরিচয় উল্লেখ করে মন্তব্যটির অর্থ তাৎপর্য বোঝাও

সগর রাজার কাহিনি

বিখ্যাত ঋষি কপিল সাংখ্যদর্শনের প্রণেতা। কর্দম প্রজাপতি ও দেবহুতির সন্তান কপিল তাঁর সাংখ্যদর্শনে নিরীশ্বরবাদের কথা প্রচার করেন। তাঁর মতে জগৎ জড়প্রকৃতি থেকে উদ্ভূত। একাগ্রচিত্তে তপস্যা করার জন্য তিনি পাতালে আশ্রম স্থাপন করেন। সগর রাজার অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া রাক্ষসবেশী ইন্দ্র চুরি করে সেখানে রেখে এলে সগরের ষাট হাজার সন্তান মুনিকে অশ্ব অপহরণকারী ভাবে। তাদের আক্রমণে রেগে গিয়ে কপিল ষাট হাজার সগর সন্তানকে পুড়িয়ে ছাই করে দেন। সগরপৌত্র অংশুমান মুনিকে শান্ত করে যজ্ঞাশ্ব ফেরত আনে এবং সগরবংশীয় ভগীরথ তপস্যাবলে জানতে পারে গঙ্গার পবিত্র জলধারা দিয়ে পূর্বপুরুষদের স্নান করাতে পারলে তাদের পাপ দূর হবে। ভগীরথ স্বর্গের গঙ্গাকে মর্ত্যে আনতে তপস্যা করেন এবং শিবকে অনুরোধ করেন গঙ্গার ধারাকে সংহত করতে। শিব গঙ্গাকে নিজের জটায় ধারণ করেন। ভগীরথ গঙ্গাকে সাধনাবলে মর্ত্যে আনেন এবং গঙ্গার স্পর্শে পূর্বজন্মের শাপ ও পাপ মুক্ত করেন। সগরসন্তানদের উদ্ধারলাভের ফলে স্থানটির নাম হয় সাগর।

কপিলমুনির মাহাত্ম্য

‘সাংখ্যদর্শন’ প্রণেতা মহর্ষি কপিল প্রথম বিদ্বান ও জ্ঞানের আধার বলে পরিচিত। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ তাঁকে এই আখ্যা দিয়েছে। ঋষি কপিল তাঁর অমূল্য দর্শনসূত্রগুলি বাংলার মাটিতে বসেই রচনা করেছেন। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর স্বজাতিমাহাত্ম্য প্রচারক ‘আমরা’ কবিতায় কপিলকে বাঙালিজ্ঞানেই গ্রহণ করেছেন এবং উপনিষদসূত্রে জ্ঞাত তাঁর পরিচয়টিকেই কাব্যভাষা দান করে বলেছেন কপিল জ্ঞানের নিধান বা আধার, আদিবিদ্বান এবং সাংখ্যকার বা সাংখ্যদর্শনের রচয়িতা।

Leave a Comment