জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়

জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় – ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২০ ফেব্রুয়ারি এরপর জুনাগড়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। এই গণভোটের দ্বারাই জুনাগড়ের ভারতভুক্তি অনুমোদিত হয় (জানুয়ারি, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ)।
 
তো চলুন আজকের মূল বিষয় জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় পড়ে নেওয়া যাক।

জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়

জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়
জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়

জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়

ভূমিকা

কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের সৌরাষ্ট্র উপকূলে অবস্থিত একটি ছোটো দেশীয় রাজ্য হল জুনাগড়। রাজ্যটির অতীত ঐতিহ্য, অবস্থান, আর্থিক সমৃদ্ধি তাকে বিশেষ পরিচিতি দান করে।

স্বাধীনতা-উত্তর পরিস্থিতি

[1] সংযুক্তি দলিল: ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর জুনাগড় বাদে কাথিয়াবাড় অঞ্চলের সব দেশীয় রাজ্য সংযুক্তি দলিল দ্বারা ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

[2] জনসংখ্যা : জুনাগড় রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ জনগণ ছিল হিন্দু। কিন্তু রাজ্যের শাসক অর্থাৎ নবাব ছিলেন মুসলমান।

কংগ্রেস নেতৃত্ব

অন্যান্য দেশীয় রাজ্যের মতো এই রাজ্যেও কংগ্রেসের সমর্থক ছিল। রাজ্যের বাইরে বোম্বাইতে তারা সামাল দাস গান্ধির নেতৃত্বে অস্থায়ী সরকার গঠন করেছিল।

নবাবের সিদ্ধান্ত

জুনাগড়ের নবাবের দেওয়ান ছিলেন স্যার শাহনওয়াজ ভুট্টো। তিনি মুসলিম লিগ-এর উগ্র সমর্থক ছিলেন। তাঁর প্রভাবে নবাব মুসলিম লিগের পক্ষ নিয়েছিলেন। ফলস্বরূপ, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট নবাব পাকিস্তানে যোগদানের সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেন।

প্রতিক্রিয়া:
এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়–

[1] গণ আন্দোলন : সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে জুনাগড় রাজ্যের হিন্দু প্রজারা বিক্ষোভ দেখায়। রাজ্যের বাইরে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়।

[2] দেশীয় রাজ্যের চাপ: কাথিয়াবাড় অঞ্চলের অন্যান্য দেশীয় রাজ্যগুলি যারা ইতিমধ্যে ভারতে যোগ দিয়েছিল, তারা ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তাদের বক্তব্য ছিল, এ বিষয়ে ভারত সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

সেনা অভিযান

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নির্দেশে ভারতীয় সেনাবাহিনী জুনাগড়ে প্রবেশ করে। নবাব এই সময় সপরিবারে পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। দেওয়ান শাহনওয়াজ ভুট্টো পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেন। জুনাগড়ের সামরিক শক্তি দুর্বল ছিল। তিনি পাকিস্তানের সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক কারণে পাকিস্তানের সাহায্য পাঠানো সম্ভব ছিল না। ফলে জুনাগড়ের পরাজয় ও পতন ঘটে।

জুনাগড়ের সংযুক্তি

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২০ ফেব্রুয়ারি এরপর জুনাগড়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। এই গণভোটের দ্বারাই জুনাগড়ের ভারতভুক্তি অনুমোদিত হয় (জানুয়ারি, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ)।

মূল্যায়ন

এইভাবে জুনাগড় রাজ্যের ভারতভুক্তি ঘটে। ভারতের ঐক্য ও সংহতি আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়।

FAQs on জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়

জুনাগড় কখন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়?

১৯৪৮ সালের গণভোটে জুনাগড়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ ভারতে যোগদানের পক্ষে মত দেন।

জুনাগড় কোথায় অবস্থিত?

আহমেদাবাদ ও গান্ধীনগর (রাজ্য রাজধানী) থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার (২২১ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে গিরনার পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জুনাগড়।

জুনাগড়ের নবাব কে ছিলেন?

জুনাগড়ের নবাব ছিলেন মুহাম্মদ মহাবত খানজি।

জুনাগড় রাজ্যটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় কত খ্রিস্টাব্দে?

১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে জুনাগড় রাজ্যটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

জুনাগড়ের দেওয়ান কে ছিলেন?

জুনাগড়ের দেওয়ান স্যর শাহনাওয়াজ ভুট্টো।
আপনি আমাদের একজন মূল্যবান পাঠক। জুনাগড় রাজ্যটি কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় -এই বিষয়ে আমাদের লেখনী সম্পূর্ণ পড়ার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।

Leave a Comment