কোন সময়কে ইউরোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নবজাগরণের শুরু বলা যায় ও কেন

কোন সময়কে ইউরোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নবজাগরণের শুরু বলা যায় ও কেন
কোন সময়কে ইউরোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নবজাগরণের শুরু বলা যায় ও কেন
মধ্যযুগে খ্রিস্টান ধর্মান্ধদের গোঁড়ামির জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা থেমে গিয়েছিল। 500 1500 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বছরের অন্ধকার যুগ পেরিয়ে আসার পর এই সময় জ্যোতির্বিজ্ঞানে শুরু হয় নতুন নতুন রহস্য উদ্‌ঘাটনের পালা। ষোড়শ শতককে ইউরোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নবজাগরণের শুরু বলা যায়। কারণ- ষোড়শ শতকে পুনরায় ইউরোপে নতুন নতুন চিন্তাবিদদের আবির্ভাব ঘটে। ম্যাগেলান, কলম্বাস, কুক প্রমুখ নাবিকদের সমুদ্রযাত্রা পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে মানুষের ধারণা পালটে দেয়।
কোপারনিকাস, গ্যালিলিও, টাইকোব্রাহে, জিওর্দানো বুনো, কেপলার ইত্যাদি খ্যাতনামা দার্শনিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের চিন্তাভাবনায় মধ্যযুগের অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে এবং শুরু হয় এক নবজাগরণের অধ্যায়।
নিকোলাস কোপারনিকাসের ‘সূর্যকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারণা’র উদ্ভব জ্যোতির্বিজ্ঞানে আলোড়ন ফেলে দেয়। তাঁর এই ধারণার মূল কথা ছিল- বুধ, শুক্র, মঙ্গল ও অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, পৃথিবীকে নয়। গ্যালিলিও (1564-1642 খ্রিস্টাব্দ) দূরবিন যন্ত্র আবিষ্কার করেন এবং বিভিন্ন গ্রহদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে কোপারনিকাসের মতকে সমর্থন করেন।
এরপর, জোহানেস কেপলার (1571 1630 খ্রিস্টাব্দ) কোপারনিকাসের মতকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন এবং বলেন প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। ‘পৃথিবীকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারণা’কে বদলে কোপারনিকাসের বিজ্ঞানসম্মত তত্ত্বই ইউরোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানে নবজাগরণের সূচনা করে, যা ইতিহাসে ‘কোপারনিকি বিপ্লব’ নামে পরিচিত।

Leave a Comment