‘ওরে ও পাগলা ভোলা’- কাদের কবি ‘পাগলা ভোলা’ বলেছেন এবং কেন? তাদের উদ্দেশে কবির বার্তা কী? |
‘পাগলা ভোলা’ সম্বোধনের কারণ
‘পাগলা ভোলা’ বলতে দেবাদিদেব ভোলানাথকে বোঝায়। যিনি একদিকে নব সৃষ্টির, অপরদিকে ধ্বংসের প্রতিমূর্তি। কবি অত্যাচারী ইংরেজদের কারাগারে বন্দি শতসহস্র বিপ্লবীদের ‘পাগলা ভোলা’ বলেছেন। আসলে ভোলানাথ পাগল হলে যেমন প্রলয় নৃত্য করে পৃথিবীকে ধ্বংস করতে পারেন, জীর্ণ পুরাতনকে ধূলিসাৎ করতে পারেন; তেমনই তরুণ প্রাণ বিপ্লবীরাও মহাশক্তিধর। তারাও পারে পৃথিবীতে প্রলয় ঘটাতে। আসলে কবি বিপ্লবীদের উজ্জীবনের মন্ত্রে দীক্ষিত করার জন্য এমন সম্বোধন করেছেন।
কবির বিপ্লবী মানসিকতা
কবি নজরুল চিন্তা ও চেতনায় ছিলেন বিপ্লবী মানসিকতাযুক্ত। তিনি যেমন ভারতবর্ষের কুসংস্কার এবং ধর্মীয় ভণ্ডামিকে মেনে নিতে পারেননি, তেমনই মেনে নিতে পারেননি ভারতবর্ষের পরাধীনতাকে। পরাধীনতার শৃঙ্খলমোচনে তিনি সদাসচেষ্ট। কবি হয়ে অসি ধরার ক্ষমতা নেই, তাই তিনি মসি ধরেছিলেন। ‘আমার কৈফিয়ৎ’ কবিতায় তিনি নিজেই বলেছেন–
কবির বার্তা
পরাধীনতার জ্বালা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন বলেই তিনি কারাগারের লৌহকপাট ভেঙে ফেলতে চেয়েছেন নিমেষে। বন্দি বিপ্লবীদের প্রেরণাদাতা হয়ে উঠেছেন তিনি। বন্দি বিপ্লবীদের ‘পাগলা ভোলা’ সম্বোধন করে তিনি তাদের প্রলয় দোলা দিয়ে কারাগারের গারদগুলোকে জোরসে ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে ভেঙে ফেলতে বলেছেন। তারা যেন ‘হৈদরী হাঁক’ দিয়ে কাঁধে ‘দুন্দুভি ঢাক’ নিয়ে মৃত্যুকে জীবনপানে ডেকে আনতে পারে।