“এটা খুবই জ্ঞানের কথা।”— বক্তা কে? জ্ঞানের কথাটি কী? বক্তা কেন এমনতর কথা বলেছেন? |
বক্তা
প্রশ্নোদৃত অংশটি লিও তলস্তয় রচিত ‘ইলিয়াস’ শীর্ষক ছোটোগল্প থেকে গৃহীত। উক্তিটির বক্তা মোল্লা সাহেব।
প্রকৃত সুখের হদিশ না পাওয়ার কথা
৩৫ বছরের প্রভূত পরিশ্রমে ইলিয়াস যে সম্পত্তি তৈরি করেছিল তার দেখাশোনা করত ইলিয়াস নিজেই, যদিও তার স্ত্রীও তাকে এই কাজে সাহায্য করত। এই সময় ইলিয়াসের বহু ধনী গুপী মানুষের সঙ্গে পরিচিতি হয়েছিল। এরপর সে সর্বহারা হয়ে পড়ল। সর্বহারা ইলিয়াসের অতীত জীবনের সমৃদ্ধি ও প্রতিপত্তির কথা দেশবিদেশের বহু মানুষই জানতেন, ইলিয়াসের অতিথি-বৎসল তার কথাও অজ্ঞাত ছিল না তাদের কাছে। কিন্তু বৃদ্ধ ইলিয়াসের কোনো দুঃখ ছিল না সম্পত্তি হারিয়ে। কারণ প্রভূত সম্পত্তির অধিকারী হলেও তার জীবনে সুখ ছিল না, শান্তি ছিল না। সবসময় চিন্তা হত অতিথিদের সঠিকভাবে আপ্যায়ন করা হল কি না। ঘোড়ার বাচ্চা, গোরুর বাছুর নেকড়ে নিয়ে গেল কি না- এসমস্ত দুশ্চিন্তা তার মাথায় থাকত। তাই জীবনের প্রকৃত সুখের হদিস তখন সে পায়নি।
বক্তার বলার কারণ
ইলিয়াস এখন মহম্মদ শা-র বাড়িতে মজুরের কাজ করে, কিন্তু সব হারিয়ে এখানে এসে সর্বহারা ইলিয়াস তার জীবনের প্রকৃত সুখ খুঁজে পেরেছে। এখন তাদের আর কোনো পিছুটান নেই, নেই অশান্তি ও দুশ্চিন্তাও। তাদের এখন একটাই মাত্র কাজ -তা হল প্রভুর সেবা করা। বাড়ি এলেই তারা খাবার ও কুমিস পায়। এখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময়ও আছে তাদের। সে বুঝেছে মানুষ মোহাসক্ত হয়েই সম্পত্তি হারিয়ে কাঁদে। কিন্তু ঈশ্বর সাধনাই মুক্তি লাভের একমাত্র পথ, ঈশ্বরই প্রকৃত সত্যটিকে তাদের সামনে উদ্ঘাটিত করেছেন। এই বিষয়টিকেই মোল্লা জ্ঞানের কথা বলেছেন।