‘একদিন একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ফরমাশ এল’ -পত্রিকার পক্ষ থেকে গল্প কথকের কাছে কীসের ফরমাশ এল? কথকের বক্তব্য অনুযায়ী তার মতো নিতান্ত সামান্য ব্যক্তির কাছে সেই ফরমাশ আসার অস্বাভাবিকতা কোথায়? |
যে ফরমাশ এল
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘দাম’ গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে গল্পকথক সুকুমারের কাছে তার ছেলেবেলার গল্প শোনানোর ফরমাশ এল একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে।
ফরমাশ আসার অস্বাভাবিকতা
আলোচ্য গল্পের কথক সুকুমার চরিত্রের একটি বড় গুণ তার বিনয়। কথক ছেলেবেলায় অঙ্ক কষতে না-পারার কারণে স্কুলের বিভীষিকা মাস্টারমশাই-এর প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়ে কেঁদে চোখ ভাসাতেন। ম্যাট্রিকুলেশন পাসের পর মাস্টারমশাই-এর হাত থেকে বাঁচতে কথক অঙ্ক বিষয়টিকেই ছেড়েছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠিত। একটি কলেজের বাংলার অধ্যাপক তিনি। সুতরাং তাকে এখন বিভিন্ন জায়গায় তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাঝেমধ্যে বক্তৃতা দিতে যেতে হয়, পত্রিকায় লেখার জন্য আবদার আসে। কথক মনে করেন সাহিত্য লেখার জন্য অনেক ইন্দ্র-চন্দ্র-মিত্র-বরুণ আছেন। সাহিত্যের এইসব প্রথিতযশা লেখকদের তুলনায় তিনি নিজেকে নগণ্য মনে করেন। তা ছাড়া পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাকে ছেলেবেলার গল্প শোনাতে বললে তিনি মনে করেন তার ছেলেবেলার গল্পে পাঠকের কোনো আগ্রহ থাকার কথা নয়। আবার এমন কোনো স্মরণীয় ঘটনাও কথকের ছেলেবেলায় ঘটেনি যা তিনি পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। তাই ‘দাম’ গল্পের বিনয়ী কথক নিজেকে ‘সামান্য ব্যক্তি’ ভেবে তার কাছে পত্রিকার তরফ থেকে ফরমাশ আসাটাকে অস্বাভাবিক বলেছেন।