‘ইলিয়াস’ পাঠ্যাংশে ইলিয়াসের জীবনের সে ওঠানামা, উত্থানপতন, সুখদুঃখের দোলাচলতা লক্ষ করা যায় তা নিজের ভাষায় লেখো। |
ইলিয়াসের জীবনের উত্থান
পতন
কিন্তু ইলিয়াসের জীবনে শান্তি চিরস্থায়ী হল না। পুত্রদের মধ্যে কোলাহল, পারিবারিক অন্তর্দ্বন্দু ও অন্যান্য কারণে ইলিয়াসের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল। সম্বলের মধ্যে রইল শুধু একটা পুঁটলি যাতে ছিল লোমের তৈরি কোট, টুপি, জুতো আর বুট আর তার বৃদ্ধা স্ত্রী। এইসময় তাদের সাহায্য করবার কেউ ছিল না।
ইলিয়াসের জীবনের সুখ
পাড়া-প্রতিবেশী মহম্মদ শা ইলিয়াসকে আশ্রয় দিল। কারণ সে জানত ইলিয়াস অত্যন্ত সৎ, কর্মঠ এবং অতিথিবৎসলও বটে। তাই সহজেই ঘরের সমস্ত কাজ ও জমির কাজটা সে করতে পারবে। প্রথম প্রথম ইলিয়াসের পরিশ্রম হত, কষ্টও হত, কিন্তু ধীরে ধীরে সব সয়ে গেল। এরকম পরিস্থিতিতে মহম্মদ শার বাড়িতে অতিথি অভ্যাগতদের আগমন ঘটল। মহম্মদ শা-র এই আত্মীয়দের ইলিয়াস সযত্নে আদর করল। ভেড়ার মাংস, ইলিয়াসের জীবনের, সুখ কুমিস-এসব খেতে দিল। কিন্তু অতিথিদের ‘মনে আগ্রহ থেকে গেল ইলিয়াসের সম্পর্কে জানার। এরপর মৃদু হেসে ইলিয়াস সম্মতি জানাল যে তার কোনো আপত্তি নেই তার জীবনের কথা জানাতে। ইলিয়াসের স্ত্রী জানাল দরিদ্র হবার ফলে তাদের জীবন থেকে টাকা পয়সা হয়তো বা চলে গেছে কিন্তু শান্তি ফিরে এসেছে। সে বলেছে-‘যখন ধনী ছিলাম, বুড়োর বা আমার এক মুহূর্তের জন্যও শান্তি ছিল না।’ ঝগড়া, অশান্তি লেগেই থাকত। কিন্তু এখন তারা একসঙ্গে সকালে ওঠে, দুটো সুখ শান্তির কথা বলে। এই শান্তি মানসিক শান্তি। এ প্রসঙ্গে বলেছেন-‘আমাদের একমাত্র কাজ প্রভুর সেবা করা। যতটা খাটতে পারি স্বেচ্ছায়ই খাটি, কাজেই প্রভুর কাজে আমাদের লাভ বই লোকসান নেই।’ আবার এই শান্তিতে তারা এতটাই আনন্দিত ছিল যে, তারা অনায়াসেই বলতে পেরেছে-‘আজ এমন সুখের সন্ধান আমরা পেয়েছি যে আর কিছুই আমরা চাই না।’ক
উপসংহার
আসলে সমগ্র গল্পটিতে ইলিয়াসের জীবনের চিত্রটি প্রকাশ পেয়েছে আর এর মাধ্যমেই ইলিয়াসের জীবনের সামগ্রিক উত্থান ও পতনের ছবিটি চিত্রিত হয়েছে।