ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স (IACS) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো
|
ভূমিকা
ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স হল কলকাতায় অবস্থিত একটি বিজ্ঞান গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান। একে সংক্ষেপে আইএসিএস (IACS) বলা হয়। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে এর প্রতিষ্ঠা করেন ডা. মহেন্দ্রলাল সরকার, যাঁকে ‘জাতীয় বিজ্ঞানচর্চার জনক’ বলা হয়।
প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য
কলকাতার বিখ্যাত চিকিৎসক জনহিতৈষী ডা. মহেন্দ্রলাল সরকার উপলব্ধি করেছিলেন যে, বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ছাড়া ভারতের উন্নতি সম্ভব নয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক গবেষণায় সহায়তা করা। উনিশ শতকে ভারতে নবজাগরণের জোয়ার শুরু হয়। কিন্তু তখন বিজ্ঞান শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ডা. মহেন্দ্রলাল সরকার ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স-এর প্রতিষ্ঠা করে ভারতে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করেন। তিনি এখানে নিয়মিত বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন করেন। তাঁকে এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের রেক্টর এবং বিজ্ঞানের অধ্যাপক ইউজিন লাফোঁ। মহেন্দ্রলাল সরকারের মৃত্যুর পর এই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তাঁর পুত্র ডা. অমৃতলাল সরকার।
পরিচালনা
এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রথম থেকেই একটি বলিষ্ঠ পরিচালন সমিতি গঠন করা হয়। এই পরিচালন সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ ব্যক্তিত্বরা। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানে অধিকর্তার পদ চালু করা হয়। প্রথম অধিকর্তা ছিলেন প্যারিমোহন মুখোপাধ্যায়। পরে নীলরতন সরকার, জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঘোষ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু এই দায়িত্ব পালন করেন।
অবদান
বিখ্যাত বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন শিক্ষকতার অবসরে এখানে নিরলস গবেষণা চালিয়েছিলেন। তিনি রমন এফেক্ট আবিষ্কার করেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার গ্রহণ করে গবেষণামূলক কাজকে আরও প্রসারিত করেন।
এখানে মূলত এক্স রশ্মি, আলোকবিজ্ঞান, চুম্বকত্ব, রমন ক্রিয়া প্রভৃতি বিষয় সংক্রান্ত মৌলিক গবেষণা পরিচালিত হত।
উপসংহার
এখনও আইএসিএস (IACS) একটি স্বায়ত্তশাসিত বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক বিজ্ঞানী এবং গবেষক এখানে গবেষণা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন বলে আশা করা যায়।