আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। |
ভূমিকা
১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে রাসবিহারী বসু সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেন। পরে রাসবিহারী বসুর অনুরোধে সুভাষচন্দ্র বসু জাপানে গিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের মধ্যে ঝাঁসির রানি ব্রিগেড নামে একটি নারীবাহিনী ছিল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের যোগদানের অন্যতম নজির ছিল এই ঝাঁসির রানি ব্রিগেড।
‘ঝাঁসির রানি ব্রিগেড’ গঠন
সুভাষচন্দ্র বসু যখন কংগ্রেসে ছিলেন তখন তিনি নারীদের সামরিক কাজে অংশগ্রহণের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করেছিলেন। তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব গ্রহণের পর নারীবাহিনী গঠনে উদ্যোগী হন এবং একটি নারীবাহিনী গঠন করেন। এই নারীবাহিনীর নামকরণ করেন ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের নেত্রী ঝাঁসির রানির (লক্ষ্মীবাঈ) নাম অনুসারে ঝাঁসির রানি ব্রিগেড। এই ব্রিগেডের নেতৃত্বে ছিলেন শ্রীমতী লক্ষ্মী স্বামীনাথন। এই বাহিনীতে প্রায় ১,৫০০ জন নারী যোগদান করেছিলেন।
ঝাঁসির রানি বাহিনীর অভিযান
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারত অভিযান করে। আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযানে ঝাঁসির রানি ব্রিগেড অংশগ্রহণ করে। কিন্তু ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের প্রবল যুদ্ধে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ক্যাপটেন লক্ষ্মী স্বামীনাথন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন।
মূল্যায়ন
অভিযানের সাফল্য বা ব্যর্থতার বিতর্কে না গিয়ে বলা যায়, আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করে ভারতের ইতিহাসে এক নজির সৃষ্টি করেছিল। তাঁদের জাতীয়তাবাদী মনোভাব ভারতীয় মহিলাদের উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। ভারতীয় নারীদের স্বনির্ভরতা ও আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথে ঝাঁসির রানি বাহিনী প্রেরণা জুগিয়েছিল।