‘আছুক শস্যের কার্য হেজ্যা গেল ঘর।’- বাক্যটির অর্থ কী? কেন পরিস্থিতিতে কোথায় এমন অবস্থা হয়েছে? |
পরিস্থিতি বর্ণন
কলিঙ্গরাজ্যের পরিস্থিতি যখন ভয়ানক, প্রলয়ের অবস্থা যখন কলিঙ্গরাজ্যের সমস্ত প্রজাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, তখন কবি এমন মন্তব্য করেছিলেন। দেখা গিয়েছিল কলিঙ্গের আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘের আবির্ভাব হয়েছে। সেই ঘন মেঘের অঞ্জন পরিবেশ-পরিস্থিতিকে এতটাই কালো দান করেছে, আলোর অভাবে কেউ কারও অঙ্গদর্শনও করতে পারছে না। ঈশাণ কোণ থেকে এই মেঘরাশি ছড়িয়ে পড়তে থাকে সমগ্র কলিঙ্গ আকাশে, সঙ্গে সান্নিধ্য দেয় উত্তুরে বৈরী বাতাস। গুরুগম্ভীর মেঘগর্জন শোনা যায়, মুষলধারে বর্ষণ শুরু হয়; যার ফলে মহাপ্লাবনের আশঙ্কা ঘনিয়ে ওঠে। প্রজারা চমকে ওঠে, বিষাদাচ্ছন্ন হয়ে তারা ভাবে বুঝি প্রলয় শুরু হবে এখনই। ঝড়ের ঝাপট তীব্র হলে বিপাকে পড়ে তারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বের হয়ে এসে শুরু করে দৌড়াদৌড়ি। মনে হয় দিক্হস্তিরা চারি মেঘে অষ্ট শুন্ডে বারিবর্ষণ শুরু করেছে। জলে জলময় হয়ে পৃথিবী বুঝি প্লাবিত হয়ে যায়। রাস্তা দেখা যায় না, কেবল ভয়াল-ভয়ংকর মেঘগর্জন। কেউ কারও কথা শুনতে পায় না। দিনরাত্রির তফাত মুছে যায়। এমন বিপদকালীন পরিস্থিতির হাত থেকে আত্মত্রাণের উদ্দেশ্যে সকল কলিঙ্গবাসী ত্রাতা হিসেবে বেছে নেয় ঋষি জৈমিনিকে। সকলে তাঁকে স্মরণ করে কায় মনো বাক্যে। জল-স্থল একাকার হয়ে গেছে, গর্তবাসী ভুজঙ্গও জলের উপর এসে ভাসছে। ক্রমান্বয়ে সাত দিন নিরন্তর বৃষ্টি হয়ে চলেছে বলে, শস্য যা ছিল তা এবং মানুষের ঘরবাড়িসমূহ সব জলে হেজে নষ্ট হয়ে যায়।