সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটাতে ফ্রান্সের সংবিধান সভা (১৭৮৯ খ্রি.) কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিল? |
অষ্টাদশ শতকে ফরাসি বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী বুর্জোয়া নেতারা সামন্তপ্রভুদের অধিকার ধ্বংসের উদ্যোগ নেয়। এজন্য ঐতিহাসিক কোবান বলেছেন যে, “ফ্রান্সে অষ্টাদশ শতক ছিল আধুনিক যুগের সুতিকাগার।”
ফ্রান্সে সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটাতে ফ্রান্সের সংবিধান সভা কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ
[ 1] সংবিধান সভা গঠন:
ফ্রান্সের জন্য সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে সংবিধান সভা (১৭৮৯ খ্রি.) গঠিত হয়। এই সভা মূল সংবিধান রচনার আগে যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে তার মধ্যে একটি ছিল সামন্ততন্ত্রের বিলুপ্তি। তৃতীয় শ্রেণির চাপে অভিজাত ও যাজকরা ৪ আগস্ট (১৭৮৯ খ্রি.) এক ঘোষণার মাধ্যমে তাদের সামন্ততান্ত্রিক অধিকারগুলি ত্যাগ করে।
[2] সামন্তকর বিলোপ:
জাতীয় সভা ১১ আগস্ট এক ঘোষণার মাধ্যমে জানায় যে, “এখন থেকে সামন্তপ্রথা বিলুপ্ত হল”। সামন্তপ্রভুরা তৃতীয় শ্রেণির দরিদ্র কৃষকদের কাছ থেকে করভি (শ্রমকর) সহ বিভিন্ন ধরনের সামন্তকর এবং গির্জা ‘টাইদ’ (ধর্মকর) আদায় করত। সংবিধান সভা এসব সামন্ততান্ত্রিক কর বিলোপ করে।
[3] সামন্তদের অধিকার বিলোপ:
সামন্ত ও অভিজাতদের বিশেষ অধিকারের বিলোপ ঘটানো হয়। ভূমিদাস প্রথা, সামন্তপ্রভুদের বংশকৌলিন্যের অধিকার, খেতাব, জমিদারি, স্বত্ত্ব, একেচেটিয়া সরকারি চাকরি লাভের অধিকার প্রভৃতি প্রথার অবসান ঘোষণা করা হয়। রাজার খাস জমি ও গির্জার জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
উপসংহার:
সংবিধান সভা আপাতত সামন্ততন্ত্রের সম্পূর্ণ বিলোপ ঘটাতে ব্যর্থ হলেও এই সভার ঘোষণাগুলি সামন্ততন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দেয়। নর্মান হ্যাম্পসন মনে করেন যে, জাতী সভা অনেকটা এগোলেও সম্পূর্ণ পথ যেতে পারেনি।