সবার জন্য শিক্ষা’ (এই নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ)
|
দোলা: জানিস অপর্ণা, এখন দেশের প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার হল সংবিধান স্বীকৃত অধিকার।
অপর্ণা : হ্যাঁ, শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯ অনুসারে এদেশের নাগরিক প্রতিটি শিশু বিনা ব্যয়ে বাধ্যতামূলক শিক্ষার আওতাভুক্ত হয়েছে।
দোলা: সম্ভবত ছয় থেকে চোদ্দো বছর পর্যন্ত শিশুরা এই আইনবলে শিক্ষার সুনিশ্চিত অধিকার লাভ করেছে, তাই না।
অপর্ণা: হ্যাঁ রে, বিশেষত যে দেশের কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করে, দুবেলা দুমুঠো খাবার পায় না, সেই দেশে এমন আইন না হলে বহু সংখ্যক মানুষ শিক্ষার মূলস্রোত থেকে চিরকাল বিচ্ছিন্নই থেকে যাবে।
দোলা: দারিদ্র্য আর অজ্ঞানতা থেকেই অল্প বয়সে বিয়ে, নারীপাচার প্রভৃতি ঘটনা ঘটতে থাকে। তাই একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সরকার দায়িত্ব না নিলে এ অভাগা দেশে জ্ঞানের আলো জ্বলবে না।
অপর্ণা: হ্যাঁ, সেই জন্যেই ‘কন্যাশ্রী’, ‘যুবশ্রী’ ইত্যাদি প্রকল্প ঘিরে মানুষের মধ্যেও একটা সাড়া পড়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার প্রতি অভাবী অভিভাবকদেরও আগ্রহ অনেক বেড়েছে। দোলা নারে, আগ্রহ থাকলেও তাঁদের হয়তো উপায় ছিল না। এখন সেই উপায় মানে পথটা তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন।
অপর্ণা: ঠিকই বলেছিস। আমাদের বয়সি ছেলেমেয়েদের দোকানে-কারখানায়, পেটের দায়ে কাজ করতে দেখলে মনটা কেমন খারাপ হয় না। ওরা আর কতদিন এভাবে বঞ্চিত থাকবে বল। কিছু কী করা যায় না?
দোলা : খুব সত্যি কথা। শিশুশ্রম প্রথা এ-দেশের শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো অভিশাপ।
অপর্ণা: শিক্ষার অধিকার আইন সম্পূর্ণ সার্থক এবং অর্থবহ হয়ে উঠবে যদি এই প্রথা চিরতরে বন্ধ হয়। ভারতের সর্বস্তরের শিশু স্কুলের। আঙিনায় এসে খেলায়-পড়ায় মেতে উঠলে, তবেই সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়িত হবে।
দোলা : একদম ঠিক বলেছিস। সেদিন প্রতিটি শিশুর মুক্তির স্বপ্ন সফল হবে।