ভারতবর্ষে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান অবস্থা ও তার কুফল বিষয়ে কাল্পনিক সংলাপ রচনা |
মিলন: দিনে দিনে আমাদের দেশের জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে রাস্তায় বাড়ছে ভিড়, যানজট আর সেই সঙ্গে জনজীবনও বিপন্ন হচ্ছে।
প্রদ্যুৎ: তা নয় তো কী! জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি লক্ষ করলে এ বিষয়টি স্পষ্টই বোঝা যায় এ দেশ কতটা জনবহুল। তা ছাড়া সেদিন ব্যক্তিগত কিছু প্রয়োজনে ইনটারনেটে দেখলাম, ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী এ দেশের জনসংখ্যা ১২১.০২ কোটি। এই ক-টা বছরে সে সংখ্যা নিঃসন্দেহে আরও কিছুটা বেড়েছে।
মিলন: তুই কি জানিস, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৬% লোক ভারতবর্ষেই বাস করে? আর সবচেয়ে ভয়াবহ কথা হল, বিশেষজ্ঞদের ধারণা জনসংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী ভারতবর্ষ অচিরেই নাকি প্রথম স্থান দখল করতে চলেছে!
প্রদ্যুৎ: সে তো হতে বাধ্য। ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ এই দশ বছরে যদি ১৮ কোটি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে তাহলে আর কীবা হতে পারে! এমনকি দেশের বিভিন্ন অংশে বহু উন্নয়নমূলক কর্মসূচি, পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার দরুন মৃত্যুহারও যে প্রতি হাজারে ২৭ থেকে কমে ১১ জন হয়ে গেছে।
মিলন: তবে, এই হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ভারতবর্ষের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে ভারতে অগ্রগতির হারও নগণ্য হয়ে পড়েছে।
প্রদ্যুৎ: জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেকার সমস্যাও তো বাড়ছে। যে হারে শিক্ষিত তরুণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার সঙ্গে সংগতি রেখে কর্মসংস্থানের সংকুলান ঘটানো বেশ মুশকিল, ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্থিতিশীলতাও বিঘ্নিত হচ্ছে।
মিলন : শুধু কি তাই? এ দেশের জনসংখ্যার বেশিরভাগই অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় শ্রমের জোগান বৃদ্ধি না পেলেও বেড়ে চলেছে ভোগ্যদ্রব্যের চাহিদা। এর ফলে দেশের মূলধন বৃদ্ধি তো হচ্ছেই না, উপরন্তু ভোগ্যপণ্যে অতিরিক্ত অর্থব্যয়ের কারণে বিনিয়োগও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
প্রদ্যুৎ: বস্তুতপক্ষে বেকারত্ব, খাদ্যসমস্যা, অর্থাভাব ইত্যাদি কারণে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যেভাবে স্তিমিত হয়ে পড়েছে তার ফলে ভারত যে অতি সত্বর আবার অনুন্নত দেশের তালিকায় নিজের নাম নিবন্ধিত করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।