বাস্তিল দুর্গের পতন ও তার গুরুত্ব লেখো

বাস্তিল দুর্গের পতন ও তার গুরুত্ব

বাস্তিল দুর্গের পতন ও তার গুরুত্ব লেখো।
বাস্তিল দুর্গের পতন ও তার গুরুত্ব লেখো।
ফরাসি রাজা ষোড়শ লুই বুর্জোয়াদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করলেও তিনি পুরাতনতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে জনপ্রিয় অর্থমন্ত্রী নেকারকে পদচ্যুত এবং প্যারিস ও ভার্সাইয়ে সেনা মোতায়েন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্যারিসের জনতা ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ ও দখল করে নেয়।

বাস্তিল দুর্গের পতনের গুরুত্ব

বাস্তিল দুর্গের পতনের গুরুত্বগুলি হল-

[1] রাজার নতিস্বীকার

বাস্তিলের পতনের পর আতঙ্কিত রাজা প্যারিসে এসে বিপ্লবের তেরঙা (লাল-নীল-সাদা) পতাকাকে ফ্রান্সের প্রতীক বলে মেনে নেন। বিপ্লবী বেইলি-কে প্যারিস পৌরসভার মেয়র পদে বসানো হয়। জাতীয় রক্ষীবাহিনীকে সংগঠিত করে বিপ্লবী লাফায়েৎ-কে এর প্রধান সেনাপতি করা হয়।

[2] স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রে আঘাত

কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ছিল স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র ও মধ্যযুগীয় স্বৈরতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্রের প্রতীক। এখানে বিনা বিচারে প্রজাদের বন্দি করে রাখা হত। তাই বাস্তিলের পতনে রাজতন্ত্র ও সামন্ততন্ত্রের ওপর প্রত্যক্ষ আঘাত আসে। এর ফলে রাজতন্ত্রের প্রতিরোধ ক্ষমতা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।

[3] জনগণের শক্তিবৃদ্ধি

বাস্তিলের পতন ফ্রান্সের সাধারণ মানুষের শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি করে। প্রবল প্রতাপশালী রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের পক্ষে যে জয় লাভ করা সম্ভব তা বাস্তিলের পতনের ঘটনা প্রমাণ করে দেয়।

[4] অভিজাতদের দেশত্যাগ

বাস্তিলের ঘটনার পর আতঙ্কিত বহু অভিজাত প্রাণভয়ে বিদেশে চলে যায়। অভিজাতরা উপলব্ধি করে যে, বিদেশি শক্তির সাহায্য ছাড়া তাদের বিশেষ অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।

উপসংহার

বাস্তিলের পতনের পর প্যারিসের শাসনক্ষমতা বুর্জোয়ারা দখল করে নেয়। ঐতিহাসিক গুডউইন বলেছেন যে, “বাস্তিলের পতনের মতো বহুমুখী ও সুদূরপ্রসারী ঘটনা বিপ্লবে আর ঘটেনি।”

Leave a Comment