প্লাস্টিকের ব্যবহার (এই নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ) |
স্বাগতা : দেখেছিস, প্রায় ৮ বছর হয়ে গেল আমাদের রাজ্যে পাতলা প্লাস্টিক বা ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ হয়েছে। অথচ এখনও বাজারে প্লাস্টিক প্যাকেটের ব্যবহার রমরমিয়ে চলছে। রেডিয়ো, টিভি, কাগজের মাধ্যমে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা হলেও অনেকেই ওই নিষিদ প্লাস্টিকের ব্যাগে জিনিস নিচ্ছে।
শ্যামলী: তা যা বলেছ, তবে বড়ো বড়ো মলে বা দোকানে অবশ্য মোটা প্লাস্টিকের প্যাকেট কিনে নিতে হয়। কিন্তু এটাও ঠিক, সংখ্যায় খুব কম হলেও আজকাল অনেকেই সচেতনভাবে প্লাস্টিকের ব্যাগ নেন না।
স্বাগতা : ‘মল’-এ ক’জন যায় বলোতো। ফুটপাথের দোকান, পাড়ার ছোটোখাটো প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকানে পাতলা প্লাস্টিকই ব্যবহার করছে। এইরকম কোটি কোটি প্লাস্টিক ব্যাগ প্রতিদিন আমরা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছি, জলে ফেলছি। অথচ ৮০ মাইক্রনের নীচে এইসব প্লাস্টিক ব্যবহার বেআইনি তা আমরা সবাই জানি।
শ্যামলী: জানলে কী হবে? আমরা দোকানে জিনিস কিনেই বলি, ‘দাদা একটা প্লাস্টিক থাকলে দিন না’। আমরা ক্রেতারা যদি সচেতন হই, তবেই অবস্থা কিছুটা বদলাতে পারে। নিজেদের থলে বা ব্যাগ সঙ্গে রাখতে ক্ষতি কী!
স্বাগতা : ক্ষতি কিছুই না, আমরা কি চটের থলে নিয়ে দোকানে যাব?
শ্যামলী: ঠিক তা নয়, এখন তো চটের ব্যাগই নানা ডিজাইনের করা হচ্ছে, কোথাও কোথাও খবরের কাগজের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। সেইসব ব্যাগ তো ব্যবহার করা যেতে পারে।
স্বাগতা : হয়তো। আসলে কী বলোতো, ‘প্লাস্টিক বর্জন’ করুন বলে দিলে চলবে না। পথে পথে চলমান বিজ্ঞাপনের সাহায্য নিতে হবে। ‘প্লাস্টিক’ প্যাকেট তো হাজার হাজার বছরেও নষ্ট হয় না। কিন্তু কত সহজে আমাদের মাটিকে নষ্ট করে দেয়। এর ধ্বংস নেই, পচন নেই। সবাইকে এই বিপদটা বোঝাতে হবে। বিজ্ঞাপনে এই ব্যাপারটা আনতে হবে।
শ্যামলী: স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে এই কাজটা শুরু করতে হবে।
স্বাগতা : খবরের কাগজে পড়লাম। সম্প্রতি কলকাতার একটা স্কুলে পরিবেশকে সুস্থ ও সুন্দর করে গড়ে তোলার ভাবনা নিয়ে সেমিনার হয়েছে। সেখানে ছাত্রীরা প্লাস্টিক বর্জন নিয়ে নাটক করেছে।
শ্যামলী: আরও একটা কথা। কোথাও এই ধরনের নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে দেখলেই সামনে গিয়ে বলতে হবে। কারণ ছোটো ছোটো দোকানিরা বা অনেকে হয়তো এই বিষয়ে জানেই না।
স্বাগতা : সরাসরি বললে কেউ যদি রাগ করে, উলটে যদি কিছু বলে?
শ্যামলী: আহা। চেষ্টা করে দেখতে দোষ কী।
স্বাগতা : তা মন্দ বলিসনি, চেষ্টাতেই সব হয়।