পরিক্রমণ গতির কারণে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি চিত্রসহ আলোচনা করো

পৃথিবী তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে পরিক্রমণ কালে কতকগুলি বিশেষ পর্যায়ে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে
পরিক্রমণ গতির কারণে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি চিত্রসহ আলোচনা করো
পৃথিবী তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে পরিক্রমণ কালে কতকগুলি বিশেষ পর্যায়ে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে, যেমন–

21 মার্চের অবস্থা : 

পৃথিবীর পরিক্রমণ কালে 21 মার্চ এমন অবস্থানে আসে যেখানে সূর্য নিরক্ষরেখার (0°) উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • এই সময় পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে, 
  • ছায়াবৃত্ত পৃথিবীর প্রতিটি অক্ষরেখাকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে, 
  • উত্তর মেরু থেকে সূর্যকে প্রায় 24 ঘণ্টাই দিগন্তরেখা বরাবর দেখা যায়, 
  • এই দিনটিতে পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে দিন-রাত্রি সমান হয় বলে একে মহাবিষুব (Vernal Equinox) বলে।

প্রভাব : 

পৃথিবীর এই অবস্থানের ফলে উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল বিরাজ করে।

21 জুনের অবস্থা : 

21 জুন পৃথিবী তার কক্ষপথের এম অবস্থানে আসে যখন কর্কটক্রান্তিরেখায় (23/½°) সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়।

বৈশিষ্ট্য: 

  • এই সময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে পড়ে, 
  • পৃথিবীর কর্কটক্রান্তিরেখা সংলগ্ন অঞ্চল সর্বাধিক সূর্যালোক পায়। এই দিনটি কর্কটসংক্রান্তি নামে পরিচিত, 
  • উত্তর গোলার্ধের মেরু অঞ্চল 24 ঘণ্টাই আলোকিত এবং দক্ষিণ গোলার্ধের মেরু অঞ্চল 24 ঘণ্টাই অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে, 
  • এই সময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সবচেয়ে বেশি উম্ন এবং দক্ষিণ গোলার্ধ অপেক্ষাকৃত কম উম্ন হয়।

প্রভাব: 

পৃথিবীর এই অবস্থানে 21 জুনের 45 দিন আগে থেকে 45 দিন পর পর্যন্ত উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে।

23 সেপ্টেম্বরের অবস্থা: 

23 সেপ্টেম্বর তারিখটিতেও সূর্য একইভাবে নিরক্ষরেখার (0°) উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়।

বৈশিষ্ট্য: 

  • এই সময় পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরত্বে থাকে, 
  • ছায়াবৃত্ত পৃথিবীর প্রতিটি অক্ষরেখাকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে, 
  • এই দিনটিতে পৃথিবীর উভয় মেরু থেকেই 24 ঘণ্টা সূর্যকে দিগন্তরেখা বরাবর দেখা যায়, 
  • পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে এই সময় দিন-রাত্রি সমান হয় বলে একে জলবিষুব (Autumnal Equinox) বলে।

প্রভাব: 

পৃথিবীর এই অবস্থানে উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল বিরাজ করে।

22 ডিসেম্বরের অবস্থা: 

22 ডিসেম্বর তারিখে পৃথিবীর এই অবস্থানে সূর্য মকরক্রান্তিরেখার (23/½° দ:) উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়।

বৈশিষ্ট্য: 

  • এই তারিখে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে পড়ে, 
  • মকরক্রান্তিরেখা সংলগ্ন অঞ্চল সর্বাধিক সূর্যালোক পায় বলে এই দিনটি মকরসংক্রান্তি নামে পরিচিত, 
  • দক্ষিণ গোলার্ধের মেরু অঞ্চল 24 ঘণ্টাই আলোকিত এবং উত্তর গোলার্ধের মেরু অঞ্চল 24 ঘণ্টাই অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে, 
  • এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধ সবচেয়ে বেশি উন্ন এবং উত্তর গোলার্ধ অপেক্ষাকৃত কম উষ্ণ হয়।

প্রভাব : 

পৃথিবীর এই অবস্থানে 22 ডিসেম্বরের আগের 45 দিন আগে থেকে পরের 45 দিন পর্যন্ত উত্তর গোলার্ধে শীতকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে।

Leave a Comment