ধ্বনি ও ধ্বনির প্রকারভেদ সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর |
১। ধ্বনি কাকে বলে?
চলতি কথায় ধ্বনি বলতে আমরা বুঝি আওয়াজ। সামাজিক মানুষেরা নিজেদের মনোভাব আদানপ্রদানের জন্য কণ্ঠ, জিভ, ঠোঁট, তালু, মূর্ধা ইত্যাদি বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে যেসব আওয়াজ উৎপন্ন করে সেগুলিই ভাষার ধ্বনি বা ধ্বনি। অর্থাৎ প্রকৃতির মেঘ ডাকার আওয়াজ, বাজ পড়ার আওয়াজ, ঝরনার ঝরঝর, যন্ত্রের ঘরঘর, প্যাকপ্যাক, মানুষের নাক ডাকা, হাঁচি- কাশির আওয়াজ-এগুলির কোনোটাই ব্যাকরণ অনুসারে ধ্বনি নয়। যদি আমি বলি কাক্-তাহলে আমার দ্বারা উচ্চারিত ‘কা’ এবং ‘ক’ দুটিই ধ্বনি।
২। কোন্ কোন্ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে বাগ্যন্ত্র গঠিত?
৩। বাধ্বনি কাকে বলে?
শ্বাসবায়ু তার গতিপথে বাগ্যন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সাহায্যে বাধা সৃষ্টি করে বা গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে নানা মাপের ও নানা ধরনের ঢেউ সৃষ্টি করে। এই ঢেউগুলি বাতাসে ভাসতে ভাসতে শ্রোতার কানে গিয়ে বেজে উঠলে তাদের বাগধ্বনি বলে।
৪। ধ্বনিকে শ্বাসবায়ুর গতিপথ অনুযায়ী কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
ধ্বনিকে শ্বাসবায়ুর গতিপথ অনুযায়ী দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা-
বহির্গামী ধ্বনি (ফুসফুস থেকে বহির্গামী বায়ুতরঙ্গে সৃষ্ট ধ্বনি-অ, আ, ক্, খ, চ্, ছ ইত্যাদি)।
অন্তর্গামী ধ্বনি (বাইরের বাতাস বাগ্যন্ত্রে ঢুকে সৃষ্ট ধ্বনি-বাংলা ভাষায় উদাহরণ নেই)।
৫। ধ্বনিসত্তার স্বরূপ অনুযায়ী ধ্বনিকে কটিভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
ধ্বনিসত্তার স্বরূপ অনুযায়ী ধ্বনিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(ক) বিভাজ্য ধ্বনি (যেমন-রাম-র্-আ-ম্)।
(খ) অবিভাজ্য ধ্বনি (উচ্চারিত ধ্বনির মধ্যবর্তী সূক্ষ্ম সুরের প্রবাহ। যেমন-রাম যাবে?)।
৬। বিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে?
কযে বাপ্রবাহকে বিশ্লেষণ করে সুস্পষ্ট ক্ষুদ্রতম উপাদানগত এককের সন্ধান পাওয়া যায়, সেই বাক্সবাহের ধ্বনিকে বিভাজ্য ধ্বনি বলে।
৭। বিভাজ্য ধ্বনি কত প্রকার ও কী কী?
বিভাজ্য ধ্বনি দুইপ্রকার। যথা—স্বরধ্বনি, ব্যঞ্জনধ্বনি।
৮। বাংলা বর্ণমালায় কটি ধ্বনি আছে?
ধ্বনির লিখিত রূপই হল বর্ণ। কিন্তু বাংলা বর্ণমালায় এমন কিছু কিছু বর্ণ আছে যাদের উচ্চারণ নেই। যেমন-ঋ, ৯ ইত্যাদি। তাই বাংলা ধ্বনির সংখ্যা ৪০টি হলেও বাংলা বর্ণমালার সংখ্যা ৫১টি।
৯। বর্ণ কাকে বলে?
আমরা স্বরধ্বনির দ্বারা যা উচ্চারণ করি তাই ধ্বনি, আর এই ধ্বনিই যখন লিখিত রূপ পায় অর্থাৎ বলার পরিবর্তে আমরা লিখি তখন তাকে বর্ণ বা অক্ষর বলা হয়।
১০। শব্দ কীভাবে গঠিত হয়?
উচ্চারিত ধ্বনিগুলি যুক্ত হয়ে যখন একটি অর্থকে প্রকাশ করে তখন শব্দ গঠিত হয়। মনে রাখা দরকার শব্দের ক্ষেত্রে অর্থ প্রকাশ পাওয়াটা জরুরি। অর্থ না থাকলে তাকে শব্দ বলা যায় না।