টীকা লেখো: স্বাধীনতা সম্পর্কে মার্কসীয় ধারণা |
স্বাধীনতা সম্পর্কে মার্কসীয় ধারণা
স্বাধীনতার প্রচলিত ধারণাকে মার্কসবাদে গ্রহণ করা হয়নি। লেনিন স্বাধীনতার ধারণাকে চারটি সূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন।
প্রথমত, স্বাধীনতা ও আমাদের চতুর্দিকে বস্তুজগৎ সম্পর্কিত যে জ্ঞান বিরাজ করছে সেগুলির মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই বস্তুজগৎ সম্পর্কে যদি জ্ঞানের অভাব পরিলক্ষিত হয়, তাহলে তা স্বাধীনতার বিরোধী বলে প্রতিপন্ন হবে। ব্যক্তি যেহেতু বস্তুজগতের নিয়মের মধ্যেই আবদ্ধ। সেহেতু তার স্বাধীনতা এই নিয়মের বাইরে হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, যেহেতু বস্তুজগতের ওপর বাস্তির স্বাধীন ইচ্ছা নির্ভর করে আছে। তাই ব্যক্তি বস্তুজগৎকে পরিবর্তন করতে চায়। বস্তুজগতের বাইরে অর্থাৎ স্বাধীন ইচ্ছার ওপরেই যদি ব্যক্তি নির্ভর করত তাহলে স্বাধীনতা পাওয়া ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব হত না।
তৃতীয়ত, উৎপাদিকা শক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সমাজেরও অগ্রগতি ঘটে এবং সমাজ তার পূর্ণাঙ্গরূপ পরিগ্রহ করে। এর থেকে সিদ্ধান্ত করা হয় যে, স্বাধীনতার বাস্তবরূপটি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে নিহিত-যা শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করে।
চতুর্থত, বস্তুজগৎ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানলাভের পর মানুষ স্বাধীনতালাভের জন্যই সচেতনভাবে তার প্রয়োগ ঘটায়। আবার যখনই সে বস্তুজগৎকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সম্যকভাবে কাজ করে, তখনই স্বাধীনতাকে সে লাঙ করতে পারে।
উপসংহারে বলা যায় যে, মার্কসীয় স্বাধীনতার ধারণাটির সঙ্গেঙ্গ যুক্ত আছে জ্ঞানবিকাশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত তাগিদ।