জীবনের লক্ষ্য কী? (এই নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ) |
রঞ্জন: দাদু মাঝেমধ্যে বলতেন জানিস, ‘এ জীবন লইয়া কী করিব? কী করা যায়?’ সেই থেকে মনের মাঝে প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।
অতসী: এটা সম্ভবত বঙ্কিমচন্দ্রের কমলাকান্তের উক্তি। তাই না।
রঞ্জন: হ্যাঁ। পরে দাদুই বলেছিলেন। কিন্তু সেইসঙ্গে উনিই বলতেন, এ প্রশ্ন শুধু কমলাকান্তের নয়, সমস্ত মানুষের।।
অতসী: একদম সত্যি কথা। এই মাধ্যমিক স্তরে এসে বুঝি, আমরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-বৈজ্ঞানিক-শিক্ষক-শিল্পী কিংবা অন্য কিছু হওয়ার হয়তো স্বপ্ন দেখি। কেউ কেউ হয়তো লক্ষ্যপূরণে সফল হব কিংবা হব না, অন্য কিছু ঘটবে।
রঞ্জন: কিন্তু এই তথাকথিত পেশাগত সাফল্য, জীবনের শেষ কথা হতে পারে না। এক মানুষের জীবন বোধহয় এর চেয়েও বেশি কিছু দাবি করে-
অতসী: মনের কথাটা বলেছিস। কোনো-না-কোনো ভাবে সকলেই হয়তো মাথা উঁচু করেই উপার্জন করব। তা বলে দিনগত পাপক্ষয়ের বৃত্তেই কি জীবন আটকে থাকবে।
রঞ্জন: তাহলে জীবনের সীমাহীন সম্ভাবনাটাই কেমন অর্থহীন হয়ে যায় না।
অতসী: অবশ্যই। মানুষের মতো মানুষ কথাটার অর্থ, নিজের পরিপূর্ণ বিকাশ। অন্তরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাগুলির পূর্ণতা প্রাপ্তি।
রঞ্জন: তাই শুধু কৃতি-সফল কিংবা প্রতিষ্ঠিত হলেই জীবনের লক্ষাপুরণ ঘটে না। বরং এক জীবন যখন আরও অজস্র জীবনকে চিন্তায়, কাজে ও আনন্দে জাগিয়ে তোলে তখনই জীবনে সার্থকতা আসে।
অতসী: খুব ভালো বলেছিস। সাফল্য-ব্যর্থতাটা বড়ো কথা নয়, জীবনের ওই লক্ষ্য পূর্ণ করার চেষ্টাই আমাদের করে যাওয়া উচিত।