জন রলসের ন্যায়নীতি তত্ত্বের ‘আদি’ বা ‘প্রারম্ভিক অবস্থান’ সম্পর্কে একটি টীকা লেখো

জন রলসের ন্যায়নীতি তত্ত্বের 'আদি' বা 'প্রারম্ভিক অবস্থান' সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।
জন রলসের ন্যায়নীতি তত্ত্বের ‘আদি’ বা ‘প্রারম্ভিক অবস্থান’ সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।

আদি বা প্রারম্ভিক অবস্থান

ন্যায়নীতি তত্ত্ব (Theory of Justice)-টির আলোচনা করতে গিয়ে জন রল্স যে অনুমানের কথা বলেছেন তার একটি হল ‘আদি’ বা ‘প্রারম্ভিক অবস্থান’ (original Position)। সামাজিক চুক্তির মতবাদকে স্মরণ করেই ‘আদি অবস্থান’ সম্পর্কে তিনি আলোচনা শুরু করেছেন। সামাজিক চুক্তি মতবাদে দেখানো হয়েছে যে, মানুষ একটি প্রাকৃতিক অবস্থায় বাস করত। এই প্রাকৃতিক অবস্থায় মানুষের নৈতিকতাবোধ ছিল এবং সে ছিন্ন স্বাধীন। প্রাকৃতিক অবস্থায় মানুষ ছিল সম-অধিকারসম্পন্ন ও যুক্তিশীল।

প্রাকৃতিক অবস্থায় মানুষের অবস্থান

সামাজিক চুক্তি মতবাদে মানুষ পরিচালিত হয়েছে নিজ নিজ স্বার্থের দ্বারা। প্রত্যেকে কেবল নিজের ভাবনাটুকুই ভাবত, অপরের ভাবনা দ্বারা পরিচালিত হওয়া বা অপরকে প্রভাবিত করার জন্য কোনো কাজ করত না। লক্ষ্য ও সামর্থ্য অর্জন এবং বৃদ্ধির জন্য মানুষ যেমন একে অপরের প্রতি আগ্রহী হয় বা আগ্রহ প্রকাশ করে, সামাজিক চুক্তি মতবাদে সেভাবে দেখানো হয়নি। অর্থাৎ ‘প্রাকৃতিক অবস্থান’ একে অন্যের কাজে অনাগ্রহী ছিল, তবে তারা যুক্তিহীন ছিল না।

রল্স কর্তৃক চুক্তির ধারণা নির্মাণ

মানুষের এই অবস্থা থেকেই রন্স তাঁর চুক্তির ধারণাটি নির্মাণ করেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে প্রাকৃতিক অবস্থায় মানুষ তার বোধশক্তি থেকে একেবারে নিষ্ক্রিয় ছিল না। এই পর্যায়ে মানুষ তার লক্ষা ও উপায়ের মধ্যে সম্পর্ককে অনুধাবন করতে পেরেছে যে, স্বার্থ সাধন করা বা পরিস্থিতি অনুধাবনের জ্ঞানও তাদের আছে। ‘আদি অবস্থান’ বলতে তাই এমন একটি ধরনকে বোঝানো হয়, যেখানে মানুষের সব ছিল কিন্তু কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।

কাল্টকে অনুসরণ

কান্টকে অনুসরণ করে বল্স উল্লেখ করেছেন যে, ‘আদি অবস্থান’-এ মানুষ পেতে চেয়েছিল অধিকার, স্বাধীনতা, ক্ষমতা, সুযোগসুবিধা, আত্মসম্মান প্রভৃতি। তিনি মনে করেন, প্রাথমিক অবস্থায় বা আদি অবস্থানে থেকে মানুষের এসবের অনুভূতি জেগেছিল এবং তারা এগুলির সর্বাধিক সুযোগসুবিধা কামনা করেছিল।

Leave a Comment